ঘূর্ণিঝড় ফণী ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে ওঠায় বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে একাধিক সমুদ্রবন্দরে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এর মধ্যে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে সাত নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ছয় নম্বর ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া ফণীর কারণে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙ্গরের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
এমনকি ফণীর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চল ৪-৫ ফুটের বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত এবং ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আমরা ইতিপূর্বে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের উপকূলীয় এলাকার মানুষকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে দেখেছি। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উপকূল ও উপকূলীয় দ্বীপসমূহের প্রায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
নিকট অতীতের সিডর কিংবা আইলা’র ক্ষয়ক্ষতিও ব্যাপক। তবে এরপর থেকেই দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের নানা সতর্কতামূলক কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ফণী থেকে সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় বুধবার থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। উপকূলের বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পাশাপাশি উপজেলা ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
এসব জেলা-উপজেলায় সাইক্লোন শেল্টারের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করে স্থানীয় জনসাধারণকে ফণী সম্পর্কে সতর্ক করতে দেখা গেছে। এমনকি ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকিতে থাকা এলাকার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্য ছুটি বাতিল করে তাদের কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এসব কার্যক্রম নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তবে ফণী মোকাবেলার আগ পর্যন্ত এ নিয়ে আত্মতৃপ্তির কোনো সুযোগ নেই। ঘূর্ণিঝড় ফণী যেন তার সর্বগ্রাসী ফণা তুলতে না পারে তা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে নিশ্চিত করতে হবে।