টাঙ্গাইলে পৌর এলাকার ভাল্লুককান্দী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা লাকী বেগম ও তার ৪ বছরের কন্যা শিশু আলিফাকে খুনের ঘটনায় ঘাতক রাইজউদ্দীনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান: গ্রেপ্তার রাইজউদ্দীন নিহত লাকী বেগমের স্বামী আল আমিনের দীর্ঘদিনের বন্ধু। বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী আল আমিনের ঘর থেকে টাকা লুটের জন্যই বন্ধুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে খুন করেছে রাইজউদ্দীন।
সোমবার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাইজউদ্দীন এসব বিষয় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার।
এর আগে রোববার ভোর রাতের দিকে ভাল্লুককান্দী এলাকা থেকে ঘাতককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাইজুদ্দীন সদর উপজেলার চর পাতুলি গ্রামের সুকুমউদ্দীনের ছেলে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন: হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুলিশের একাধিক চৌকষ টিম মাঠে নামে। পরে বিভিন্ন তথ্য ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, রক্তমাখা জামা ও লুট করা টাকা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো বলেন: রাইজউদ্দীন ও আল-আমিন দীর্ঘদিনের বন্ধু। এ সুবাদে তাদের পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা ছিল। আর আল-আমিন বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসায়ী হওয়ায় তার কাছে প্রায় সময়ই নগদ অর্থ জমা থাকতো, যা সে বাসায় রাখতো। আর ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ঘাতক রাইজউদ্দীন তা জানতো এবং কখনো কখনো বাসা থেকে দোকানে টাকা পরিবহন করে দিতো। ঘটনার দিন আল-আমিন ৮ লাখ টাকা বাসায় রেখেছে জেনেই রাত সাড়ে আট থেকে নয়টার মধ্যে পরিকল্পিতভাবে বন্ধুর স্ত্রীকে হত্যা করে টাকা লুটের উদ্দেশে ঘরে প্রবেশ করে।
পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার বলেন: প্রথমেই সে লাকী বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং শিশু কন্যা তা দেখে কাকু আম্মুকে মারছে বলে চিৎকার করায় তাকে গলাকেটে হত্যা করে। হত্যার পর ঘরে রাখা টাকা নিয়ে বের হয়ে যায়। পরে ছোঁড়া পাশের ধানক্ষেতে ও টাকা নিজ বাড়ির মুরগি রাখার ঘরে লুকিয়ে রাখে।
তিনি বলেন: ঘাতক রাইজউদ্দীন অনেক চতুর প্রকৃতির। ঘটনার প্রকাশ হবার পর থেকেই সে প্রতিটি ঘটনায় নিহতে স্বামীর আল-আমিনের সাথে ছিলো। এমনকি মামলা তদারকিতেও সে ভূমিকা পালন করেছে।
এ ঘটনায় নিহত লাকী আক্তারের বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে টাঙ্গাইল সদর থানায় গতকাল একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
উল্লেখ্য, ঘটনার দিন শনিবার রাতে আল-আমিন তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে বারবারর যোগাযোগ করে ব্যর্থ হলে রাত সোয়া বারটার দিকে বাড়ীতে গেলে তাদের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।