চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

৫৬ বছরে বিটিভি: পরিবর্তনের অঙ্গীকার

বাংলাদেশের সরকারি গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভির ৫৫তম বর্ষপূর্তি শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর)। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান টেলিভিশন নামে চালু হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

এরপর বাংলাদেশের জন্মের পরের বছর সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশ, মাটি ও মানুষের কথা বলার ব্রত নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ টেলিভিশন। ১৯৮০ সালে দর্শকদের রঙিন পর্দা উপহার দেয়ার মাধ্যমে নতুন যুগে পা রাখে বিটিভি। এখন বিটিভি ওয়ার্ল্ড’র মাধ্যমে দেশের বাইরেও নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়েছে।

দর্শকের কাছে পৌঁছাতে যুগোপযোগী পরিবর্তনের অঙ্গীকার আর প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে এবার ৫৬ বছরে পা রাখতে যাচ্ছে গণমাধ্যমটি। এ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিটিভির রামপুরার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিটিভির মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ, অনুষ্ঠান ও পরিচালনা পরিচালক জগদীশ এষ, উপ-মহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) ড. তাসমিনা আহমেদ, উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) অনুপ খাস্তগীর, ঢাকা কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নাসির মাহমুদসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও প্রযোজকবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক হারুন-অর-রশীদ বলেন, গণমানুষের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার ও বিনোদনের যে সাধারণ চাহিদা তা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে থাকি বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে। টেলিভিশনকে তো পিছিয়ে থাকলে চলে না; তাই একবিংশ শতাব্দীতে এসে অন্যান্য টেলিভিশনের মতো আমরাও যুগোপযোগী হতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিটিভিকে সব সময় প্রান্তিক মানুষদেরকে সুযোগ করে দিতে হয়। হয়তো সেই কারণে কাদা-মাটির মানুষ এবং অনুষ্ঠান আমাদের এখানে বেশি। আর জনরুচির ইতিবাচক পরিবর্তনকে অনুপ্রেরণা যোগানো হলো বাংলাদেশ টেলিভিশনের দায়িত্ব। এ জন্য আমরা ডিজিটাল কনটেন্ট ও প্রোগ্রাম তৈরি করছি, যেগুলো এই মুজিবশতবর্ষে শিগগিরই প্রচারে যাবে।

তিনি বলেন, বিটিভি নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। বিটিভির অনুষ্ঠান ক্রমশই আধুনিক হচ্ছে এবং বিষয়-বৈচিত্র সাজানো জনবান্ধব অনুষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আমরা দর্শককে আরো বেশি বিটিভির সঙ্গে সংযুক্ত করতে খবর ও বিনোদনের পাশাপাশি দর্শকবান্ধব অনুষ্ঠানের দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছি। মহাপরিচালক আরো বলেন, আমাদের এই টেলিভিশন জনগণের টেলিভিশন, আমাদের এই টেলিভিশন রাষ্ট্রের টেলিভিশন, এই টেলিভিশন মানুষের টেলিভিশন। সুতরাং এই টেলিভিশনে প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে সবাইকে মতবাদ দেয়া ও অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। এই বিজয়ের মাসে আমরা সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

এই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় করোনাকালেও গণমাধ্যম হিসেবে বিটিভি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। ২০২০ সালে বিটিভি কিছু নতুন অনুষ্ঠান চালু করেছে। যেমন করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ তথ্য, ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা নিয়ে সরাসরি অনুষ্ঠান ‘এই সময়’ সোম থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রচারিত হয়। প্রতিদিনের খবর ও খবরের বিশ্লেষণ নিয়ে সরাসরি অনুষ্ঠান ‘খবর প্রতিদিন’ প্রতিদিন রাত ১২টায় প্রচারিত হচ্ছে।

এছাড়া স্বাস্থ্য জিজ্ঞাসা, বিটিভির সংলাপ, সরাসরি গানের অনুষ্ঠান নিশি গুনগুন, সুপ্রভাত বাংলাদেশ দর্শকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে। চালু হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকের রাজনৈতিক টক শো ‘বাংলাদেশ ফাইলস’, ধারাবাহিক তথ্যচিত্র ‘নাটের গুরু’ ও সকালের সরাসরি অনুষ্ঠান ‘শুভ সকাল বাংলাদেশ’। নারীরা কথা বলছেন তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে ‘ফিফটি পার্সেন্ট’ অনুষ্ঠানে। শুরু হয়েছে জেলা ভিত্তিক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ‘বাংলাদেশের হৃদয় হতে’।

বাংলাদেশ টেলিভিশন ‘বদলে যাবে বদলে দিবে’ -এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিটিভি আরো গণমুখী করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলেও জানান মহাপরিচালক।

এদিকে চ্যানেলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে করোনাভাইরাসের এই কঠিন সময়ে কোনো বৃহৎ আয়োজন না থাকলেও বিটিভির কর্মকর্তা- কর্মচারীরা নিজেরাই স্বল্প পরিসরে উদযাপন করবেন দিনটি। এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লাইভ অনুষ্ঠান প্রচার করবে চ্যানলটি। দুটি স্টুডিও থেকে এই লাইভ অনুষ্ঠান পরিচালিত হবে। এতে শুভেছা বিনিময়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আয়োজনও রয়েছে।