করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা শেষে দীর্ঘ ৫৩ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে গুলশানে তার ভাড়া বাসা ফিরোজায় ফেরেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এবিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, হাসপাতালে বেশিদিন থাকলে ইনফেকশনের শঙ্কা থাকে। তাই তাকে (খালেদা জিয়া) বাসায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক এফ এম সিদ্দিকী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল। তবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন। বেশকিছু জটিলতা আছে। বাসায় রেখেই তার চিকিৎসা চালিয়ে যাবো। দু’তিন সপ্তাহ পর আবারো হাসপাতালে নিয়ে কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা করাতে হতে পারে।
তিনি বলেন, লিভারসহ বিভিন্ন সমস্যার উন্নত চিকিৎসার সুবিধা এখানে নেই। তার আরো উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
এর আগে গত ৩ জুন বিকালে তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) থেকে কেবিনে নেওয়া হয়। সেদিন বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, চেয়ারপার্সনের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে এখনো করোনা পরবর্তী বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হলেই তাকে বাসায় নেওয়া হবে।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ২৭ এপ্রিল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে ৩ মে তার শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে স্থানান্তর করা হয়। ৮ মে তৃতীয় দফা নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা ফল নেগেটিভ আসে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের সদস্যরা তাকে বিদেশ নেওয়ার সুপারিশ করেন। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বিদেশ যাওয়ার অনুমিত চেয়ে আবেদন করা হয়। কিন্ত শেষ পর্যন্ত সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।
জানা যায়, করোনা মুক্ত হলেও পরবর্তী বেশ কিছু জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। কিডনি, ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা দেখা দিলে তাকে সিসিইউতে রেখেই চিকিৎসা করানো হয়। মাঝে মধ্যে তার হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও ওঠানামা করে। তবে তার ব্যক্তিগত এক চিকিৎসক জানান, বর্তমানে চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে। কিডনি সমস্যাও কমার দিকে। কিছুদিন আগে জ্বর আসলেও তা পুরোপুরি সেরে উঠেছেন।