প্রথম টেস্টে দুই উইকেট নিয়েছেন। দ্বিতীয় টেস্টে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেটে রাঙালেন মুমিনুল হক। যেনতেন ব্যাটারকে নয়, প্রতিপক্ষ অধিনায়ক টম ল্যাথামকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন টাইগার দলপতি। আড়াইশ পেরিয়ে থেমেছেন কিউই ওপেনার। তার খানিক পরে ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছে স্বাগতিকরা।
ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে প্রথম ইনিংসে রানপাহাড়ে চেপে ৬ উইকেটে ৫২১ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড। টম ব্লান্ডেল ৬০ বলে ৫৭ ও কাইল জেমিসন ৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে ল্যাথাম ফিরেছেন ২৫২ রানে। ৫৫২ মিনিট ধরে খেলা ৩৭৩ বলের ইনিংস, ৩৪ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো। মুমিনুলের বলে ইয়াসির নিয়েছেন ক্যাচ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ২৬৪ রানের ইনিংসটি হয়ে থাকল বাঁহাতি কিউইয়ের টেস্ট সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
হ্যাগলি ওভারে আগেরদিনের ১ উইকেটে ৩৪৯ রানের সাথে ৭৪ যোগ করে সোমবার ৫ উইকেটে ৪২৩ নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝিতে এসে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে ডাকল নিউজিল্যান্ড।
প্রথমদিনে ইবাদতের করা ইনিংসের নবম ওভারে দুবার এলবিডব্লিউ হয়ে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন ল্যাথাম। পরে চান্সলেস ইনিংসটাতে ২০৮ রানে থাকার সময় তাসকিনের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন। অনেকটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বল হাতে নিলেও তালুবন্দি করতে পারেননি টাইগার পেসার। ডাইভে শরীর মাটিতে আছড়ে পড়ার সময় বল ছিটকে যায় নিয়ন্ত্রণ থেকে।
সকালের প্রথম বলে ইবাদতকে চার মেরে তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন কনওয়ে। লেগ স্টাম্পের উপর করা হাফভলি বল ফাইন লেগ দিয়ে সীমানা ছাড়া করেন। একই ওভারের পঞ্চম বলে প্রায় পরাস্তই ছিলেন কনওয়ে। ইবাদতের ফুললেন্থ বল ব্যাটের উপরের কানায় লাগে। বাড়তি বাউন্স থাকায় স্লিপের উপর দিয়ে উড়ে পেরিয়ে যায় সীমানা।
শরিফুলের বলে ল্যাথাম রান নিতে মরিয়া হলে ঘটে বিপত্তি। এক রানের জন্য ছুটতে গিয়ে গোলমাল পাকিয়ে ফেলেন অধিনায়ক। কনওয়ে ছিলেন অপ্রস্তুত, সুযোগে মিরাজের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে ফেরেন। ১৬৬ বলে ১২ চারে ১০৯ রান করে যান। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ১২২।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২৪ রানের জুটি গড়েছেন ল্যাথাম ও কনওয়ে। ২০১৪ সালে শারজায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও কেন উইলিয়ামসনের ২৯৭ রানের জুটির রেকর্ড এখনো অক্ষত। ১৯৮৭ সালে ওয়েলিংটনে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে জন রাইট এবং এন্ড্রু জোন্স দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করেছিলেন ২৪১ রান, যেটি দুইয়ে।
ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করতে থাকা রস টেলরের উইকেট তুলে নেন ইবাদত। ক্রাইস্টচার্চ হয়ে রইল তার স্যালুটের সাক্ষী। মুহূর্তটি অন্য কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের ব্যাট করতে নামা না লাগলে টেস্টে নিজের সর্বশেষ ইনিংসটি খেলে ফেললেন টেলর।
৩৯ বলে ৪ চারে ২৮ রান করা টেলর ঠিকঠাক ব্যাটে-বলে সংযোগ না করতে পারায় লেগসাইডে শরিফুলের হাতে ধরা পড়েন। ক্রিজে আসা ও আউট হওয়ার পর দর্শকদের দাঁড়িয়ে করতালির সম্মান পান টেলর। ইবাদতের শিকার হওয়ার পর টাইগাররা এসে হাত মিলিয়ে নেন। ক্রিজে আসার সময় মুমিনুলরা দিয়েছিলেন গার্ড অব অনার।
খানিক পরে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরতে হয় হেনরি নিকোলসকে। ইবাদতের বলে উইকেটের পেছনে সোহানের গ্লাভসবন্দি হন। আম্পায়ার আউট না দেয়ায় রিভিউ নিয়েছিলেন মুমিনুল, হয়েছেন সফল।
প্রথম সেশনের শেষ বলে শরিফুল উইকেট তোলেন। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ড্যারিল মিচেল। তিন রান করা ব্যাটারকে আম্পায়ার মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তিনি রিভিউ নেন, শেষ রক্ষা হয়নি।