চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

৫০০ সদস্য নিয়ে ফ্যামিলি ফটো!

পরিবারের সব সদস্যকে এক করে বছর-দু’বছরে বা বিশেষ উপলক্ষে ছবি তুলে স্মৃতি রাখা অনেক পরিবারেরই ঐতিহ্য। পরিবারের মোটামুটি সব সদস্য সে ছবিতে অংশ নেন, কখনো ৪/৫জন থেকে শুরু করে তা ১৫, ২০ এমনকি ৩০ জনও হয়।

কিন্তু সদস্য সংখ্যা যদি হয় ৫০০???

এমনই এক ঘটনা ঘটেছে চীনের পূর্বাঞ্চলের ঝেইজিয়াং প্রদেশের শিশে গ্রামে। গ্রামটির অধিবাসী রেন পরিবারের ৫শ’রও বেশি সদস্য মিলে অংশ হয়েছেন এক অভূতপূর্ব ফ্যামিলি ফটোতে।

চীনা চান্দ্র নববর্ষের সপ্তাহব্যাপী উৎসব চলাকালে চীনা পরিবারগুলোতে এমনিতেই সব আত্মীয়স্বজন এক হয়ে আনন্দ আর খাওয়াদাওয়া করাটা একটা রীতি। তাই গত সপ্তাহের সেই সময়টাকেই বেছে নিয়েছিল রেন পরিবার তার ফ্যামিলি ফটোর জন্য।

আলোকচিত্রী ঝ্যাং লিয়াংজং একটি ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে ওপর থেকে বিশাল এই পরিবারকে এক ফ্রেমে বন্দী করেন। বিবিসিকে তিনি জানান, রেন পরিবার প্রায় ৮৫১ বছর ধরে টিকে আছে। কিন্তু আট দশকেরও বেশি সময় ধরে তাদের পারিবারিক ধারাবাহিকতার তথ্য বা ‘ফ্যামিলি ট্রি’ হালনাগাদ করা হয়নি।

তাই গ্রামের মুরুব্বিরা সম্প্রতি এই পরিবারটির ফ্যামিলি ট্রি’র তথ্য হালনাগাদের কাজ নিয়ে বসেন এবং কমপক্ষে ২ হাজার জীবিত সদস্যকে খুঁজে পেতে সক্ষম হন।

এই ফ্যামিলি ট্রি সম্পূর্ণ করা উপলক্ষেই চান্দ্র নববর্ষকে সামনে রেখে এক বিশাল পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়, যেখানে অংশ নিতে পেরেছেন রেন পরিবারের ৫শ’র বেশি সদস্য। তারা বেইজিং, সাংহাই, শিনজিয়াং এবং তাইওয়ান থেকে শিশে গ্রামে জড়ো হন, যেখান থেকে পরিবারটির উৎপত্তি।

এতগুলো মানুষকে একসঙ্গে এক জায়গায় জড়ো করে ছবি তোলা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এজন্যই ড্রোনের সাহায্য নেন লিয়াংজং। পুনর্মিলনীতে আসা সব সদস্যকে গ্রামের কাছে একটি ব্যাসল্ট পাহাড়ের কাছে দাঁড় করিয়ে ছবিগুলো তোলা হয়।

শিশের গ্রাম্য প্রধান রেন তুয়ানজি নিজেই রেন পরিবারের ২৬তম প্রজন্মের সদস্য। চীনা ভাষায় তার নামের অর্থ ‘পুনর্মিলন’। তিনিই মূলত রেন পরিবারের পুনর্মিলনীর উদ্যোগ নেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়াকে তুয়ানজি বলেন, ফ্যামিলি ট্রি তৈরির একটা উদ্দেশ্য ছিল পরিবারের পূর্বসূরি ও উত্তরসূরিদের অবস্থান ও অবস্থা সম্পর্কে জানা। এবং পূর্বসূরিদের তুলনায় পরবর্তী প্রজন্মগুলো কী অবস্থায় আছে তার তথ্য রাখা।

“আর দ্বিতীয় উদ্দেশ্যটি হলো পরিবারের সদস্যদেরকে তাদের শেকড় সম্পর্কে জানানো। তারা যেখানেই যাক, যেভাবেই থাকুক, যেন মনে রাখে তারা কোথা থেকে এসেছে,” বলেন তুয়ানজি।

চীনে বড় বড় পরিবারের বহু সদস্য নিয়ে পারিবারিক ছবি তোলা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এত বেশি মানুষ নিয়ে ফ্যামিলি ফটো তোলার নজির এ-ই প্রথম।