রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে শেষ বলে নিশ্চিত হল বাংলাদেশের ভাগ্য। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ রানে হেরে ছিটকে গেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। সুপার টুয়েলভে নিজেদের বাকি দুম্যাচে এখন কিছু একটা অর্জন করে ফেরার তাগাদা টাইগারদের।
জয়ের জন্য শেষ বলে দরকার ছিল ৪ রান। আন্দ্রে রাসেলের অফস্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি ব্যাটেই লাগাতে পারেননি অধিনায়ক রিয়াদ। ২৪ বলে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১৪৩ রানের লক্ষ্যে নামা বাংলাদেশ ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৩৯ রান।
লিটন দাস সর্বোচ্চ ৪৪ রান করলেও খেলেন ৪৩ বল। প্রয়োজনের সময় বাউন্ডারি আসেনি তার ব্যাট থেকে। তাতে বলের চেয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে প্রয়োজনীয় রানের হিসাব।
মাহমুদউল্লাহ চেষ্টা করে গেছেন রানের গতি বাড়াতে। কিন্তু শেষ ওভারে ৪ বল নিজে মোকাবেলা করলেও মারতে পারেননি কোনো বাউন্ডারি। শেষ ৪ ওভারে দরকার ছিল ৩৩ রান। হাতে ৭ উইকেট। ক্রিজে দুই সেট ব্যাটার লিটন ও মাহমুদউল্লাহ।
অথচ বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারলেন না তারা। মাহমুদউল্লাহ ১৮তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মারার পর ১১ বলে দরকার হয় ১৬ রান। সহজ সমীকরণও শেষে মেলাতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ।
লিটন যখন আউট হন, আর ৬ বল বাকি। প্রথম দুটি বল খেলেন আফিফ হোসেন। ২ বলে ২ রান করে থাকেন অপরাজিত। টপঅর্ডারে নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার ১৭ রান করে অবদান রেখে যান। মুশফিকুর রহিম ৮ রান করে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন।
ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন সাকিব আল হাসান। সফল হতে পারেননি। ৯ রান করে আউট হন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল পাঁচ বোলারই নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
শারজার লো বাউন্স উইকেটে টস হেরে আগে ব্যাট করে ১৪২ রান তুলতে বেশ লড়াই করতে হয়েছে ক্যারিবীয়দের। ১৪ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৭০ রান। শেষ ৬ ওভারে তারা যেটির দ্বিগুণ রান তুলেছে।
১৪ ওভারে দলটির সংগ্রহ যেখানে ৭০ রান, পরের দুই ওভারেই ক্যারিবিয়ানরা তোলে ২৯ রান। মোস্তাফিজ ১৪ রান খরচ করার পর সাকিব নিজের শেষ ওভারে দেন ১৫। দুটি ছক্কা হজম করেন বাঁহাতি স্পিনার।
স্লগে শুধু শরিফুল ইসলামকে বেশি মারতে পারেননি উইন্ডিজ ব্যাটাররা। বাঁহাতি পেসার ১৯তম ওভারে নেন দুটি উইকেট। পুরান ও চেজকে ফেরান। ওই ওভারে আরও একটি উইকেট পেতে পারতেন শরিফুল। জেসন হোল্ডারের সহজ ক্যাচ ছাড়েন আফিফ হেসেন।
টস জিতে আগে বোলিং করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল অসাধারণ। দুই ওপেনার এভিন লুইস ও ক্রিস গেইল ফিরে যান শুরুতেই। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে লুইসকে আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দেন মোস্তাফিজ। ৯ বলে ৬ রান করা ওপেনার ক্যাচ দেন মুশফিকুর রহিমের হাতে।
পঞ্চম ওভারে মেহেদী বোল্ড করেন গেইলকে। মারকুটে বাঁহাতি ওপেনার আজও ছিলেন নিষ্প্রভ। ১০ বলে ৪ রান করে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়েন। পরে ফিরে যান শিমরন হেটমায়ারও। আন্দ্রে রাসেল বল খেলার আগেই হন রান আউট। কাইরেন পোলার্ড স্বেচ্ছা অবসরে যান।
উইন্ডিজের ইনিংস মূলত দাঁড়িয়ে যায় রোস্টন চেজ ও নিকোলাস পুরানের ব্যাটে। ২৫ রানে মেহেদীর ক্যাচ মিসে জীবন পাওয়া চেজ ৩৯ রান করে আউট হন। পুরান ২২ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন। পঞ্চম উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়ে ইনিংস মেরামত করেন।হোল্ডার ৫ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
শেষে পোলার্ড ক্রিজে ফিরে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেন। শরিফুল, মোস্তাফিজ ও মেহেদী দুটি করে উইকেট নেন। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে সাকিব কোনো উইকেট পাননি।