তিন জুলাই। অন্যদিনগুলোর মতোই সাধারণ একটি দিন। কিন্তু এই দিনটি রক মিউজিকের ইতিহাসের কালো একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত! আর তার কারণ হলো এই দিনে হারাতে হয়েছে রক মিউজিকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বহু গুণী মানুষকে।
১৯৭১ সালের ৩ জুলাই আমেরিকান রক ব্যান্ড ‘দ্য ডোরস’-এর প্রধান গায়ক ও গীতিকার, লেখক, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং কবি জিম মরিসন মৃত্যু বরণ করেন। প্যারিসের একটি হোটেল রুমে গোসল করার সময় হার্ট অ্যাটাকে মাত্র ২৭ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর।
মরিসনের বাবা ছিলেন সামরিক কর্মকর্তা। ছেলেকেও চেয়েছিলেন সে পথেই নিয়ে যেতে। কিন্তু কবিতা আর গানের প্রতি প্রবল নেশায় বুঁদ ছিলেন মরিসন। ফলে বাবার সাথে তৈরী হয় দূরত্ব। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এক বন্ধুর সঙ্গে মিলে ১৯৬৫ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘দ্য ডোরস’ ব্যান্ডটি। এর প্রায় দুই বছর পর অ্যালবাম বের করেন। যা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। লাইট মাই ফায়ার, দ্য এন্ড, অ্যালাবামা সং কিংবা ব্রেক অন থ্রু’র মতো গান মানুষের মুখে মুখে ফিরতে থাকে।
দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠেন মরিসন। গান কবিতায় বুঁদ হয়ে থাকা জিম মরিসনের একের পর এক অ্যালবাম প্রকাশ হতে থাকে। তার গান মানেই বিলবোর্ডে শীর্ষে। সারা বিশ্বকে অবাক করে দেয় তার গানের কথা, সুর ও গায়কী।
বাউণ্ডুলে জীবন ও অত্যন্ত রাগী স্বভাবের জন্য জীবনে নানা ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়েছে মরিসনকে। রাগ এবং দর্শকের সঙ্গে হাতাহাতির কারণে দু’বার স্টেজ থেকে গ্রেপ্তারও করা হয় তাঁকে। প্রেম-বিয়ে-বিচ্ছেদ এর মুখোমুখি হয়েছেন একাধিকবার। মদ্যপায়ী হিসেবে কুখ্যাতি ছিলো তাঁর, এমনকি মারাত্মক ধরণের কোকেনসেবীও ছিলেন তিনি।
মারা যাওয়ার আগের রাতেও অতিরিক্ত কোকেন সেবন করে বাথটাবে শুয়ে ছিলেন মরিসন। সকালে তার স্ত্রী পামেলা কার্সন মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন তাঁকে। বেশ গোপনে পেরে লাশেইসে সিমেট্রিতে সমাহিত করা হয় রক মিউজিকের এই দুর্দান্ত প্রতিভাকে। মরিসন মারা যাওয়ার ছয়দিন পর ভক্তদেরকে তার মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়েছিলো।
শুধু জিম মরিসন নয়, ১৯৬৯ সালের এই দিনে ‘রোলিং স্টোনস’ ব্যান্ডের সদস্য ব্রিয়ান জোনস নিজের সুইমিং পুলে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন। অতিরিক্ত মদ্যপান এবং নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনের কারণে মৃত্যু হয় এই রক তারকার। তিনিও মাত্র ২৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন।
১৯৭৩ সালের ৩ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন লরেন্স হ্যামন্ড। তিনি হ্যামন্ড বাদ্যযন্ত্রটি আবিষ্কার করেছিলেন। রক সংগীতে হ্যামন্ড একটি বহুল ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র।
১৯৭৩ সালের আজকের দিনে ‘৬০-ডেট ট্যুর’-এর ফাইনাল শো’তে ডেভিড বোয়ি ঘোষণা দিয়েছিলেন, এটাই তার সর্বশেষ লাইভ পারফরমেন্স। এরপর আর স্টেজে গান গাননি তিনি।
১৯৮৬ সালে ইউটু ব্যান্ডের সদস্য গ্রেগ ক্যারল ডাবলিনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন। ইউটু’র ১৯৮৭ সালে প্রকাশ পাওয়া ‘ওয়ান ট্রি হিল’ গানটি ক্যারলকে উৎসর্গ করা হয়েছিল। -আইহার্ট