চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

২৫ বছর আগের টিনের বাড়িতে চলছে সরকারি প্রাথমিক স্কুলের পাঠদান

টিনের জীর্ণ ভবনের তিনটি কক্ষে পাঠদান চলছে জয়পুরহাটের পলিকাদোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সরকারি এই স্কুলের প্রাক প্রাথমিকের ক্লাস চলছে ভাড়া নেওয়া কক্ষে। বর্ষায় ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা আর গ্রীষ্মকালে গরমের মধ্যেই ক্লাস করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

জয়পুরহাট শহর থেকে দশ কিলোমিটার দূরে নিভৃত পল্লীতে অবস্থান পলিকাদোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯০৬ সালে স্থানীয়দের দান করা ৪৭ শতাংশ জায়গায় স্থাপিত এ বিদ্যালয়টিতে তিন কক্ষের টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয় ১৯৯৬ সালে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অপেক্ষাকৃত নিচু টিনশেডের এই ভবনে শিক্ষালাভ করছে ১১৯ জন শিক্ষার্থী। যাদের নিয়মিত পাঠদানে দায়িত্ব পালন করছেন ৫জন শিক্ষক। কক্ষ সংকটের কারণে দুপুরের মধ্যেই পাঠদান শেষ করতে হয় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। এরপর বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান। কক্ষ সঙ্কুলান না হওয়ায় স্কুল সংলগ্ন ভাড়া নেওয়া পৃথক একটি কক্ষে পাঠদান করতে হয় প্রাক-প্রাথমিকের (শিশু শ্রেণি) শিক্ষার্থীদের। যেটি স্কুলের টিনশেড ভবন থেকে প্রায় ১০০ ফুট দূরে অবস্থিত।

দীর্ঘদিনের পুরনো টিনশেড ভবনে পাঠদানে বেশি সমস্যা হয় বর্ষাকালে। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড় শুরু হলে ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে পড়ে শিশু শিক্ষার্থীরা। তখন পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়। আর গ্রীষ্মে প্রখর রোদে টিনের গরমে ক্লাসে থাকতে চায় না শিশু শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে ওই বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, টিন শেডের পুরনো শ্রেণি কক্ষগুলো খুবই নিচু। শিক্ষার্থীরা বলেন, গরমের সময় প্রচণ্ড গরম লাগে, ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে ঘরে থাকতে ভয় করে। তখন বিদ্যুৎ চলে গেলে ঘর অন্ধকার হয়ে যায়। অন্ধকারে ক্লাস করা যায় না। আবার চলমান বৈদ্যুতিক ফ্যানের শব্দে ক্লাস করতে খুবই সমস্যা হয়।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মওদুদ আলম জানান, আমারা এই স্কুলের জন্য ৪৭ শতক জায়গা দান করেছি। ভবন নির্মাণের কথা বলে প্রতি বছর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই স্কুলের নাম লিখে নিয়ে যায়। অথচ ভবন নির্মাণের কোন ব্যবস্থা হয় না হওয়ায় অতি কষ্টে এই বিদ্যালয় পড়ালেখার কার্যক্রম চলছে।

স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো. সালাহ্ উদ্দীন বলেন, প্রতি বছর এ স্কুল থেকে মেধা ও সাধারণ গ্রেডে শিক্ষার্থীরা বৃত্তিলাভ করে। স্কুলের বার্ষিক ফলাফলও সন্তোষজনক। জেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়গুলো পাকা এবং দ্বিতল। কেবল আমাদের স্কুলটিই অনেক পুরানো। ভবন নির্মাণের জন্য অনেক জায়গাও রয়েছে। তারপরেও কোন ব্যবস্থা হয় না। আমাদের অফিস কক্ষও ছোট। কোনোরকমে কার্যক্রম চলে।

বিদ্যালয়টির কক্ষ সঙ্কটের কথা স্বীকার করে জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তারেক মো. রওনাক আখতার জানান, চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ে স্কুলটিতে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করার। এজন্য কাগজপত্রও পাঠিয়েছি। বরাদ্দ আসলেই বিদ্যালয়টির সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।