এক লাখ ৫ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ২৩৫ কোটি ৬৬ লাখ ১৯ হাজার ১৮৬ টাকা।
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনলাইন সভায় সার কেনার এই প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভা শেষে অর্থমন্ত্রী এই অনুমোদনের কথা জানান।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির জন্য একটি এবং ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদনের জন্য ৮টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৪টি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ২টি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ও সড়ক পরিবহন এবং মহাসড়ক বিভাগের একটি করে প্রস্তাবনা ছিল।
অনুমোদিত ৮টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৫ হাজার ৬৬৪ কোটি ৬৮ লাখ ৪ হাজার টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি হতে ব্যয় হবে ২২৪ কোটি ২৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) ঋণ ও দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৪৪০ কোটি ৪০ লাখ ১৯ হাজার টাকা।
পরে অনলাইনেই সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, ৬৩ কোটি ৭৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে সপ্তম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
একইভাবে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) কাতারের মুনতাজাত থেকে চতুর্থ লটে ২৫ হাজার টন ইউরিয়া সার ৫৮ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মুনতাজাত থেকে বিসিআইসির পঞ্চম লটে আরও ২৫ হাজার টন বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার ৫৬ কোটি ৫৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে সৌদি বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (সাবিক) থেকে চতুর্থ লটে ২৫ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ৫৬ কোটি ৪৯ লাখ সাড়ে ১৭ হাজার টাকায় কিনছে বিসিআইসি। এই প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া অন্যান্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)’র অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড-এ ২০২১ পঞ্জিকাবর্ষে প্রক্রিয়াকরণের জন্য ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) এডিএনওসি, আবুধাবী এবং সৌদি আরামকো, সৌদি আরব থেকে ৫ হাজার ২শ ৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকায় আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন বিআরটিএ’র আওতায় ৫ বছর মেয়াদে ঢাকা মেট্রো-১ অফিসে ১২ লেন বিশিষ্ট ভিআইসি (ভেহিকেল ইন্সপেকশন সেন্টার) স্থাপনের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, হার্ডওয়ার ইত্যাদি সরবরাহ, স্থাপন, পরিচালনা, মেইন্টেনেন্স ও মেয়াদ শেষে হস্তান্তরের লক্ষ্যে সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডকে ১০৫ কোটি ২২ লাখ ৯৪ হাজার টাকায় নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়।
“বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার ভবন নির্মাণ” প্রকল্পের ডব্লিউ-৩ লটের আওতায় সিলেট জেলা পুলিশ লাইন্স এলাকায় ১টি আবাসিক ভবন নির্মাণ কাজ সম্পাদনে পদ্মা অ্যাসোসিয়েট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে ৫৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকায় নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়। প্যাকেজের আওতায় ১৫তলা আবাসিক ভবন, প্রতি তলায় ৬৫০ বর্গ ফুট বিশিষ্ট ১২টি ইউনিট, অভ্যন্তরীণ স্যানিটারী ও বৈদ্যুতিকরণ, ভূ-গর্ভস্থ জলাধার, গভীর নলকূপ, পাম্প মোটর, রাস্তা, কম্পাউন্ড ড্রেন ও পিএবিএক্স সিস্টেম নির্মাণ করা হবে।
এছাড়া “বাংলাদেশ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য ঢাকা গুলশান এলাকায় ২টি বেইজমেন্টসহ ১৪তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ” প্রকল্পের ডব্লিউ-১ প্যাকেজের আওতায় পূর্ত কাজ সম্পাদনে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হোসাইন কনস্ট্রাকশন ও আমানত এন্টারপ্রাইজকে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ২৫ হাজার টাকায় অনুমোদন দেয়া হয়। প্যাকেজের আওতায় ২টি বেইজমেন্টসহ ১৪তলা ভবন, ৪টি ইউনিটের প্রতিটি ২২০০ বর্গফুট এবং ২টি ফ্লোরে ২টি ডুপ্লেক্সসহ ৪৮টি ফ্ল্যাট অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ফুটপাত, গেটসহ সীমানা প্রাচীর, কম্পাউন্ড ড্রেন এবং গার্ড শেড নির্মাণ করা হবে।