বিনিয়োগ বাঁচাতে সাধারণ ছুটির মধ্যেই আগামী পহেলা মে থেকে ক্ষুদ্র, খুচরা ও পাইকারি মার্কেটসহ সারাদেশের সব দোকান খুলতে চায় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।
সোমবার দোকান খোলার অনুমতি চেয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি দিয়েছে তারা।
সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন এবং মহাসচিব মো. জহিরুল হক ভূইয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে আগামী মাস থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত স্বস্থ্যবিধি মেনে সব ধরণের দোকান খোলা রাখতে চায় তারা।
এতে উল্লেখ করা হয়, গত মার্চ মাস থেকে সমগ্র বাংলাদেশের সব দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সরকার কর্তৃক ছুটি ঘোষণা করা হলে আমরা সে অনুযায়ী বন্ধ রেখেছি। তবে প্রধানমন্ত্রীর ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা ক্ষুদ্র, খুচরা ও পাইকারি দোকানিদের পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে দোকান-পাট বন্ধ থাকায় ক্ষুদ্র, খুচরা ও পাইকারি দোকানদারদের আয় রোজগারের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এসব ব্যবসায়ী ও তাদের কর্মচারীরা অর্ধাহারে অনাহারে অতিকষ্টে দিনযাপন করছেন। তারা পথে বসার উপক্রম হয়েছে। আপনি জানেন ইতোমধ্যে পহেলা বৈশাখে মার্কেট ও দোকানসমূহ বন্ধ থাকার কারণে আমাদের ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকার পুঁজি নষ্ট হয়েছে।
সেই সঙ্গে পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয় তাও বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তা সত্ত্বেও বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পাইকারি, ক্ষুদ্র, খুচরা মার্কেট ও দোকানসমূহ দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং জীবন রক্ষার্থে বন্ধ রাখার মানসিক প্রস্তুতি আমাদের ছিল।
কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম যে, গত ২৫ মার্চ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের উদ্যোগে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় গার্মেন্টস ও বৃহৎ শিল্পসমূহ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সে অনুযায়ী গত ২৬ এপ্রিল থেকে গার্মেন্টসসমূহ খুলতে শুরু করেছে। শ্রমিকরাও দলে দলে আসতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে নরসিংদী জেলা প্রশাসক, জেলা চেম্বার ও বণিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে দেশের বৃহত্তর পাইকারি মার্কেট নরসিংদীর বাবুর হাট খুলে দেয়া হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র, খুচরা ও পাইকারি মার্কেট ও দোকানসমূহ আগামী পহেলা মে থেকে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে খোলা রেখে আমাদের এ সব ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এর আগে গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ দোকান মলিক সমিতি জানায়, এক দিন দোকান বন্ধ থাকার ক্ষতি ১ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। তারা এ হিসাব করেছে একেকটি দোকানে গড়ে ২০ হাজার টাকা বিক্রি ধরে। আর লভ্যাংশ ধরা হয়েছে ১০ শতাংশ। এ হিসাব দিয়ে কর্মচারীদের বেতন দিতে আড়াই হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে সমিতি। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় তারা দোকান খোলার প্রস্তাব দিয়েছে।