বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মহাসমাবেশে জঘন্যতম বোমা-হামলার বিচার পেতে নানা বাধাবিপত্তি পার করে দেশবাসীকে সুদীর্ঘ ১৯ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে মন্তব্য করে দলটি বলছে, তারপরও বিচার হওয়াটা সন্তোষের। এ রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
বোমা হামলার রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেছেন; মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় পর্যালোচনা করেই সিপিবি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে। সুদীর্ঘ ১৯ বছর পর হলেও, বিচার হওয়াটা সন্তোষের বিষয়। বিচারের রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
এ বিবৃতিতে সিপিবি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন; সিপিবির মহাসমাবেশে বোমা-হামলার যদি দ্রুতই বিচার হতো, তাহলে পরবর্তী বোমা-হামলাগুলো না-ও হতে পারত। আলোচিত এই বোমা-হামলার বিচারের জন্য শুধু দীর্ঘ সময় ক্ষেপণই করা হয়নি, উপরন্তু নানা অন্তর্ঘাতমূলক ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। শুধু দায়িত্বহীনতা, অবহেলাই নয়, সরকারের পক্ষ থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জনমতকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা কল্পকাহিনী সাজানো হয়েছে। বোমা-হামলাকে সিপিবির অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলে চালিয়ে দেয়া, পার্টির আহত কমরেডকে বোমা বহনকারী সাজানোর অপচেষ্টাসহ সরকারের পক্ষ থেকে বিচারের ক্ষেত্রে নানাভাবে বাধা-বিঘ্ন ও বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছিল। এক সময় চূড়ান্ত প্রতিবেদনের নামে মামলা শেষ করে দেয়ারও চেষ্টা হয়েছিল। বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার এসব প্রচেষ্টারও বিচার হওয়া প্রয়োজন।
‘‘সিপিবির মহাসমাবেশে বোমা-হামলার বিচার হয়েছে আইনগতভাবে। হরকাতুল জিহাদের কিলিং স্কোয়াড চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু এই হামলার পেছনে বিভিন্ন শক্তির যোগসাজশ ছিল। শুধু আইনগতভাবে নয়, বোমা-হামলার পেছনের অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক-সামাজিক বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। রাজনৈতিক শক্তির উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণ করা জরুরি কর্তব্য। এজন্য উচ্চ পর্যায়ের ট্রুথ কমিশন গঠন করতে হবে।’’
রাজধানীর পল্টনে সিপিবি’র সমাবেশে বোমা হামলার মামলায় ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও ২ জনকে খালাস দিয়েছেন ঢাকা মহানগর অতিরিক্ত তৃতীয় যুগ্ম জজ আদালত।
এ মামলার ৬ আসামি পলাতক রয়েছেন।
১৯ বছর আগে, ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবি’র সমাবেশে ওই বোমা হামলার ঘটনায় ৫ জন নিহত হন, আহত হন অনেকে।