ফরাসি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে যাওয়া এম্যানুয়েল মাক্রোঁ (৩৯) এখনই নিজেকে জয়ী ভাবছেন না। কারণ হিলারি ক্লিনটনের মতো ভুল করতে চান না এই মধ্যপন্থী।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘ঠিক এরকমই (জয় হাতের মুঠোয়) ভুল করেছিলেন হিলারি। আমি এমনটি ভাবছি না। প্রথম থেকেই আমি এভাবে আত্মরক্ষা বা লড়াই করিনি।’
ফ্রান্সের সর্বকনিষ্ঠ এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী প্রথম পর্বের ভোটে সবচেয়ে বেশি ভোট পান। ১১ জন প্রতিযোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুইজন দ্বিতীয় দফায় ভোটের লড়াইয়ে নামবেন। ৭ মে অনুষ্ঠিতব্য ‘রান অফ’এ মাক্রোঁর প্রতিদ্বন্দ্বি কট্টর ডানপন্থী মারিন লা পেন।
তাই চূড়ান্ত পরীক্ষার ২ সপ্তাহের কম সময় সামনে রেখে (৮ দিন) নির্বাচনী প্রচারণা আরও জোরালো করেছেন তিনি।
অর্থনীতির উন্নতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নের কথা বলে জনগণের মন জয়ে সক্ষম মাক্রোঁ। সরকারি কর্মচারী থেকে লাখপতি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার, পরবর্তীতে সরকারের অর্থমন্ত্রী হওয়া মাক্রোঁ ‘অভিজাতদের প্রতিনিধি নন’ বলে জানিয়েছেন।
ফরাসি টিভি চ্যানেল টিএফ১-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি কোন ছোট গ্রুপের বা বিশেষ শ্রেণীর প্রার্থী নই। মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং ফ্রান্সের সবচেয়ে অরক্ষিত অংশের সুরক্ষা কাজ করবো আমি। আমার পরিকল্পনা শহর-গ্রাম, কৃষক-শ্রমিক, কর্মী-উদ্যোক্তাসহ পুরো ফ্রান্সের জন্য কথা বলে।
অন্যদিকে ‘পার্টির উর্ধ্বে উঠে সকল জনগণের জন্য কাজ করতে চাই’ বলে ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টি প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান লা পেন। দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগে অভিবাসনবিরোধী কট্টরপন্থী এই নেতার উদ্যোগ। ২০১১ সালে বাবার জায়গায় দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।
ইউরোপ বিরোধী বার্তা দিয়ে সমর্থকদের মাঝে প্রচারণা চালানো লা পেন থেকেও নিজেকে আলাদা করেছেন মাক্রোঁ। তিনি জানিয়েছেন, আমি বার্লিনের বিরোধী নই। আমি বার্লিনের সাথে। আমাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু বার্লিনের বিরুদ্ধে গিয়ে তার স্বার্থ রক্ষার কথা আমি আজ ফ্রান্সকে বলবো না।
‘ইউরোপ আমাদেরই একটি নির্মিত বন্ধন। আমরা সার্বভৌমভাবে ইউরোপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা আমাদের শান্তি, আমাদের সমৃদ্ধি, মুক্তির জন্য তা করেছিলাম।’
ফ্রান্সের নির্বাচনের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যত অনেকটাই নির্ভর করছে। কারণ জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকা লা পেন একাধারে এই জোট এবং সর্বজনীন মুদ্রা হিসেবে ইউরো প্রচলনের ঘোর বিরোধী হিসেবে পরিচিত।