অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রাজ্যে ও টেরিটোরিতে থাকা হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন এবং পূজা উদযাপনকারী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
কৃষ্ণাকুটির, সার্বজনীন পূজা উৎসব অফ ভিক্টোরিয়া, বাংলাদেশ পূজা এন্ড কালচারাল সোসাইটি অফ ভিক্টোরিয়া-সহ সংগঠনগুলো রোববার ২৪ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়া জুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়।
এই বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ সমাবেশের অংশ হিসেবে ভিক্টোরিয়া রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
কোভিড-১৯ এর সীমাবদ্ধতার জন্য এই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড-খণ্ডভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিভিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বক্তারা হিন্দুদের উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বক্তারা বলেন ,স্বাধীনতার ৫০ বছরে এখন পর্যন্ত হিন্দুদের উপর যতগুলো আক্রমণ সংঘটিত হয়েছে তার একটারও বিচার সম্পন্ন হয়নি। যার ফলে এসব সাম্প্রদায়িক শক্তি একটার পর একটা পরিকল্পিতভাবে হিন্দু নিধনে মেতে উঠেছে।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং আদিবাসীরা কয়েক দশক ধরে সহিংসতা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের শিকার হয়ে আসছে।
বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়, আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বর্বর ও নৃশংস সব হামলার তীব্র নিন্দা অধিকার জ্ঞাপন করেন।
ভিক্টোরিয়া রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কৃষ্ণা কুটিরের পক্ষে সানি সঞ্জয়, বাংলাদেশ পূজা কালচারাল সোসাইটি অব ভিক্টোরিয়ার পক্ষ থেকে পীযূষ দত্ত, সার্বজনীন পূজা উৎসব ভিক্টোরিয়ার পক্ষে চপল চৌধুরী-সহ আরো অনেকে।
এছাড়া বাংলাদেশীদের বিভিন্ন রাজ্যে ও টেরিটোরিতে থাকা পূজা সংগঠনগুলোর উদ্যোগে একসাথে অস্ট্রেলিয়া জুড়ে আজ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়।
এসব প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা কিছু সুস্পষ্ট দাবি অতি শিগগিরই বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানান। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- এই ঘটনার পূর্ণ, নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন তদন্ত করা এবং এই তদন্তের ফলাফল জনসমক্ষে উন্মোচিত করা হোক। হিন্দুদের বিরুদ্ধে এই সহিংস হামলার দুষ্কৃতকারী ও পরিকল্পনাকারীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য একটি বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন করা হোক।
এই হামলাকারীদের সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক অবস্থান নির্বিশেষে সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক। হামলায় সকল ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর, উপাসনালয় এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুনর্নির্মাণ করতে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশেষ আইন প্রণয়ন করতে হবে। এ যাবতীয় হামলার পুনরাবৃত্তি রোধ করার উদ্দেশ্যে একটা বিশেষ আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে, যেখানে কমপক্ষে ৪০% সদস্য হিন্দু সম্প্রদায় থেকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
পুলিশ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার যেসব সদস্য হিন্দুদের সুরক্ষা দেবার কাজে নিয়োজিত ছিল, কিন্তু সে কাজে অবহেলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য একটি ভিন্ন মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে।
সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চলছে।