মুস্তাফিজুর রহমান প্রেমে পড়েছেন। অবশ্য সেটা নতুন কিছু নয়। এর আগেও প্রেমে পড়েছেন তিনি। তবে এবারেরটা পুরোপুরি ভিন্ন এবং বিদেশী। এর আগে খেলার প্রেমে পড়েছিলেন মুস্তাফিজ। এবার প্রেমে পড়েছেন হায়দরাবাদী বিরিয়ানির।
হায়দরাবাদ সানরাইজার্সের হয়ে খেলতে গিয়ে হায়দরাবাদী বিরিয়ানী আর রসমালাইয়ের ভক্ত হয়ে পড়েছেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ। তার নতুন প্রেমের কথা চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন তার মামা সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম।
মামার সঙ্গে হায়দরাবাদ থেকে নিয়মিতই যোগাযোগ রাখছেন মুস্তাফিজ। জানাচ্ছেন তার ভালো লাগা, খারাপ লাগা, সুন্দর সব সময় আর মাঝেমধ্যে একা একা বোধ করার একটু একটু কষ্টের অনুভূতি।
খেলা, প্র্যাকটিস আর বিশ্রাম। হায়দরাবাদে এর বাইরে অবসরে কী করছেন মুস্তাফিজ? এমন প্রশ্নে শরিফুল ইসলামের জবাব: ইউটিউবে খেলা দেখে। আর? বাংলাদেশের নাটক দেখে। মোশাররফ করিম তার পছন্দের অভিনেতা। ‘খেলা, খেলা আর খেলা,’ এটাই মুস্তাফিজের জীবনের প্রধান দিক হলেও খেলার বাইরের জীবনের অন্যদিকগুলো নিয়েও চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন মামা শরিফুল ইসলাম।
রোববারই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বছর শেষ করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। গত বছরের ২৪ এপ্রিল ১৯ বছর বয়সে তার অভিষেকের পর থেকেই তিনি ক্রিকেট বিশ্বে আলোচিত এক নাম। অার এবার আইপিএল খেলতে গিয়ে আরো বেশি আলোচিত মুস্তাফিজুর রহমান।
মাঠে প্রতিটি বলে নিজেকে নতুন করে চিনিয়ে সবার হৃদয়-মন কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি বয়সে ছোট আর অসাধারণ প্রতিভার কারণে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের পুরো টিমের কাছেও সবচেয়ে আদরের পাত্র মুস্তাফিজ।
‘সেকথাই সে ফোনে বারবার বলে,’ জানিয়ে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বলেন, সবার সঙ্গেই ওর সুন্দর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে।
‘দেশের বাইরে এর আগেও খেলতে গেছে মুস্তাফিজ। কিন্তু এবার তো পুরোই একা একা আছে। তাই আমরা যে যখন পারি ওর সঙ্গে একটু কথা বলার চেষ্টা করি। আমাদের যতো আত্নীয়-স্বজন আছে সবাই ওর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। সবাই দিনে একবার করে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি,’ এমনটাই বলছিলেন মামা শরিফ।
তবে খেলার দিনগুলোতে মুস্তাফিজের সঙ্গে তাদের কথা হয় না। ‘তাছাড়া পিচটা কেমন, প্র্যাকটিস কেমন চলছে এসব নিয়ে হালকা কথাবার্তা হয় খেলার আগের ও পরের দিনগুলোতে। কথা হয় ওর পারফরম্যান্স নিয়েও,’ বলতে বলতে ভাগ্নের সাফল্যে শরিফের চওড়া হাসিটা আরেকটু চওড়া হয়।
দেশে থাকতেই বারবার সাতক্ষীরায় মায়ের কাছে ছুটে যেতেন মুস্তাফিজ। এখন তো দেশের বাইরে। তাই চাওয়াটাও একটু বেশি।
শরিফুল ইসলাম বলেন: সব সন্তানই মায়ের ভক্ত হয়। মুস্তাফিজও ব্যতিক্রম নয়। দেশে থাকতেই কিছুদিন পর পর মায়ের কাছে ছোটে সে। এখন তো দেশের বাইরে। হুম, মাঝেমধ্যে একটু আধটু অস্থিরও হয়ে পড়ে।
‘তবু ভালো, এখন অনেক আধুনিক প্রযুক্তি আছে। চাইলেই ফোনে কথা বলতে পারে, আবার ভিডিও কলও করতে পারে। তাই দূরে থাকলেও ঠিক মনে হয় না অনেক দূরে আছে,’ খানিকটা স্বস্তির সুরে শরিফুল ইসলাম বলেন: তাছাড়া ওখানে এখন সবার সঙ্গেই মোটামুটি বন্ধুত্ব হয়েছে। সবার ছোট বলে আদরও পায় বেশ। তাই অনেকটাই মানিয়ে গেছে।
মামা শরিফ জানান, পরিবার, জাতীয় দলের টিমমেটদের ছেড়ে একা একা থাকার কষ্টতো আছেই, তবে খেলাটাও অনেক এনজয় করছে মুস্তাফিজ। ‘ভারতে কষ্টের কথা বলতে শুধু জানিয়েছে দিনের বেলা প্রচণ্ড গরম। ফলে একটু আধটু সমস্যাতো হচ্ছেই।’
তিনি জানান: আইপিএল নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা তেমন কিছু না বললেও নিজের দলকে সবসময় সেরা অবস্থানে দেখতে চান মুস্তাফিজ।
আর মুস্তাফিজের সাফল্যে পুরো বাংলাদেশের মতো তার পরিবারেও বইছে আনন্দের বন্যা। ‘পুরো পরিবারের গর্বের বিষয় মুস্তাফিজ। পরিবারের জুনিয়ররাও মুস্তাফিজ বলতে অজ্ঞান।’
শরিফুল ইসলাম তার বোনের কথা জানিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘মুস্তাফিজের মা-ও তাকে অনেক মিস করেন। কিন্তু সন্তানের ক্যারিয়ারের কাছে নিজের কষ্টকে পরাজিত করাতে চাইবেন না কোন মা?’