চট্টগ্রামের হাসপাতালে ১২ দিন আগে বিয়ে হওয়া ক্যান্সার আক্রান্ত ফাহমিদা কামালকে (২৭) শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করতেই হলো।
সোমবার সকাল ৭টার দিকে নগরীর ও আর নিজাম রোডের মেডিক্যাল সেন্টারের এইচডিইউতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
গত ৯ মার্চ রাতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে ক্যান্সার আক্রান্ত প্রেমিকা ফাহমিদা কামালকে বিয়ে করে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন প্রেমিক মাহমুদুল হাসান।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল হকের প্রথম সন্তান মাহমুদুল হাসান নর্থসাউথ থেকে এমবিএ আর চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ বাকলিয়াতে জন্ম নেওয়া ফাহমিদা কামাল ইইউবি থেকে বিবিএ ও এমবিএ শেষ করেছেন।
স্বজনরা জানান, শিক্ষাজীবনে তাদের দুজনের পরিচয়। এরপর দুজন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
এক সময় জানা যায়, ফাহমিদার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণঘাতী বোন ক্যান্সার। ধরা পরার পর সঙ্গে সঙ্গে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা এভারকেয়ার, পরে ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে দীর্ঘ একবছর চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেয়, ফাহমিদার চিকিৎসা আর সম্ভব নয়। ইঙ্গিত দেয় তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুব ক্ষীন।
এরপর পরিবারের লোকজন ২০ বছর বয়সি ফাহমিদাকে চট্টগ্রামে নিয়ে এসে মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করায়। সেখানে চলতে থাকে চিকিৎসা। কিন্তু ক্রমাগত ফাহমিদার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
যা দেখে হাসান সিদ্ধান্ত নেয় তার প্রেমিকাকে বিয়ে করার। নিজের পরিবারকে নিয়ে এসে প্রস্তাব দিল হাসান, ফাহমিদাকে বিয়ে করতে চাই। মৃত্যুপথযাত্রী ফাহমিদাকে হাসানের বিয়ে করার প্রস্তাবে সবাই হতবিহ্বল হলেও এক সময় সবাই রাজি হয়।
গত ৯ মার্চ ২০২২ তারিখ বাদ-এশা মেডিকেল সেন্টারেই তাদের বিয়ের আয়োজন হয়। বিয়ের ঠিক ১২ দিনের মাথায় মৃুত্যুবরণ করলেন ফাহমিদা কামাল নামের ওই তরুণী।
নাম প্রকাশ না করা সূত্রে, হাসানের চাচাতো ভাই জানায়, আজ ভোর ছয়টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাহমিদা মারা যায় এবং আজ তাকে চট্টগ্রামে দাফন করা হবে।