চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

হারিয়ে যাবে ঝিঁঝি পোকার ডাক!

ঝিঁঝি পোকা বা ফড়িংয়ের মতো Orthoptera গোত্রের পোকারা হয়তো ইউরোপ থেকে হারিয়েই যাবে! এদের মূল আবাসস্থল তৃণভূমির ধ্বংসসাধনের কারণেই এমন হুমকির মুখে পড়েছে এই শ্রেণীভুক্ত পোকারা। সম্প্রতি প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থার (আইইউসিএন) এক গবেষণায় এমন বাস্তবতার কথা উঠে এসেছে, যা বাস্তুতন্ত্রে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

১৫০ জন বিজ্ঞানীর সহায়তায় ২ বছর ব্যাপি এক গবেষণা শেষে এমন সীদ্ধান্তে পৌঁছেছে গবেষকরা। এই গবেষণা প্রতিবেদনের নেতৃত্ব দেয়া অ্যাক্সেল হককিচ আইইউসিএন’র অমেরুদন্ডী প্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক সাব-কমিটির প্রধান। তিনি বলেন, ফড়িং বা অন্যান্য Orthoptera গোত্রের প্রাণীরা যেমন ঝিঁঝি পোকা বা ঘাস ফড়িং বিলুপ্ত হলে আমরা বৈচিত্র হারাবো। জীববৈচিত্রের উন্মুক্ত বাস্তুতন্ত্রের ক্ষেত্রে তারা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

ইউরোপে ১ হাজারেরও বেশি প্রজাতির ফড়িং ও ঝিঁঝি পোকার বাস। এই প্রজাতিদের নিয়ে প্রথম গভীর বিশ্লেষণ শেষে দেখা যায় এদের এক-চতুর্থাংশেরও বেশি বিলুপ্তির পথে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর করজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এর মতে, ইউরোপ জুড়ে অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় এই পোকা শ্রেণী-ই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে।

ঝিঁঝি পোকা, ঘাস ফড়িং এবং ফড়িং-রা Orthoptera শ্রেণীভূক্ত প্রাণীর অন্তর্গত, যাদের বাস তৃণভূমিতে। এরা পাখি ও সরিসৃপ প্রাণীদের খাবারের গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যাদের সংখ্যা হ্রাস গোটা বাস্তুতন্ত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দাবানল, নিবিড় কৃষি ব্যবস্থার বিস্তার এবং পর্যটন উন্নয়নে কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের বাসস্থান হ্রাস পাচ্ছে।

আইইউসিএন’এর বৈশ্বিক প্রাণী প্রজাতি প্রোগ্রামের ডেপুটি পরিচালক জিন ক্রিসটোফ ভিয়ে বলেন, এই প্রজাতিদের বিলুপ্তির কিনার থেকে ফিরিয়ে আনতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের আবাস্থল রক্ষা ও সংরক্ষণ। টেকসই তৃণভূমি ব্যবস্থাপনায় যেমন প্রথাগত কৃষি চর্চার মাধ্যমেও এমনটি করা সম্ভব, অভিমত তার।

‘আমরা যদি এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নেই তবে ইউরোপের তৃণভূমিতে ঝিঁঝির ডাক হয়তো শীঘ্রই অতীতের বিষয় হয়ে যাবে।’

আইইউসিএন এর ইউরোপিয়ান অঞ্চলের পরিচালক লুক বাস বলেন, বিলুপ্তির পথে থাকা প্রজাতিদের নিয়ে আইইউসিএন-এর লাল তালিকার ফলাফল ভীতিকর।

এই প্রতিবেদনে ইউরোপজুড়ে জনসংখ্যা প্রবণতার উপর পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথাও বলা হয়।