ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্র হাইতিতে ভূমিকম্পে ৩শ’ ০৪ জন নিহত হয়েছেন। এখনও নিখোঁজ শতাধিক। দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি এই ভূমিকম্পকে ব্যাপক ক্ষতি বলে আখ্যায়িত করে এক মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও তা তুলে নেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেশটিতে দ্রুত সহায়তা পাঠাতে তার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
শনিবার স্থানীয় সময় সকাল প্রায় সাড়ে ৮টার দিকে পুরো ক্যারিবিয়ান অঞ্চলজুড়ে অনুভূত হয় ভূমিকম্প। তবে এর সবচেয়ে বড় আঘাতটি হানে হাইতিতে। ভূমিকম্পে দেশটির বহু গির্জা, হোটেল, দোকানপাট ও ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে-ইউএসজিএস জানিয়েছে, ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হাইতির সেন্ট লুইস দু সুদ শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। যা রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্স থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে। তবে ইউরোপিয়ান-মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার-ইএমএসসি অবশ্য বলছে, কম্পনটির মাত্রা ৭ দশমিক ৬ ছিল। ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বেশ কয়েকটি আফটার শকও অনুভূত হয়েছে।
রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সে ভূমিকম্পটি প্রবলভাবে অনুভূত হলেও সেখানে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ভূমিকম্প উপকেন্দ্রের কাছের শহর লি কাইতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভূমিকম্পের সময় শহরটি কিছুক্ষণের জন্য পানিতে তলিয়ে যায়। পরে সে পানি নেমে গেলেও সুনামির আশঙ্কায় কিছু লোক পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।
ভূমিকম্পে আহত মানুষের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। ধ্বংস্তূপে চাপা পড়াদের উদ্ধারে জরুরি বিভাগের কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অতি মাত্রায় ক্ষয়ক্ষতির কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। সবার আগে শিশুদের রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। হাসপাতালগুলো আহতদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
এর আগে ২০১০ সালে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের আঘাতে দেশটিতে ২ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। সেই ক্ষতই এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি হাইতি।