ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন আবারও হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছেন।
হাইকোর্টে আবার জামিন আবেদন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোয়াজ্জেমের আইনজীবী রানা কাওসার।
এর আগে গত ৯ জুলাই বিচারপতি মো. মইনুল ইসলাম ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদন উত্থাপন হয়নি মর্মে (নট প্রেস রিজেক্ট) খারিজ হয়।
ওইদিন আদালতে মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ ও আইনজীবী সালমা সুলতানা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গাজী মামুনুর রশীদ।
এর আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এই মামলায় সাইবার ট্রাইব্যুনাল ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন খারিজ করেন। এরপর সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এসে জামিন আবেদন করেন মোয়াজ্জেম।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তার মা ২৭ মার্চ থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে থানায় ডেকে নিয়ে তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন।
পরবর্তীতে গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত। এ ঘটনায় পৃথক একটি মামলায় তদন্ত শেষে ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২৯ মে ফেনীর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
আর নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার পরই নুসরাতের জবানবন্দীর (ওসির কাছে দেওয়া) বিষয়টি সকলের সামনে আসে। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে গত ১৫ এপ্রিল মামলা করেন।
ট্রাইব্যুনাল বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ নম্বর ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে। এই প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ২৭ মে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এরপর পলাতক অবস্থায় আগাম জামিনের আবেদন করে মোয়াজ্জেম ১৬ জুন হাইকোর্টে আসেন। ওইদিনই হাইকোর্ট এলাকা থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন। এরপর তাকে সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তার জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।