মাদক আইনের মামলায় জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে বের হন তিনি। আর তার মুক্তির দিনেই পরীমনিকে রিমান্ডে নেয়া বিষয়ে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট বলেছেন, ‘রিমান্ডের উপাদান ছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা প্রার্থনা দিল, আপনি (ম্যাজিস্ট্রেট) মঞ্জুর করে দিলেন। এগুলো কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। রিমান্ড অতি ব্যতিক্রমী বিষয়।’ বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন। পরীমনির জামিন আবেদন নিয়ে নিম্ন আদালতের আদেশ বাতিল সংক্রান্ত রুল শুনানিতে আদালত এসব কথা বলেন।
এর আগে পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পরে তার নামে মামলা ও দফায় দফায় রিমান্ড বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি কোনো প্রশ্ন না করা হলেও কোন অপরাধে রিমান্ড আর কোন মামলায় জামিন, এসব নিয়ে নানা দ্বিধাদ্বন্দে পড়তে দেখা গেছে অনেককে। এই অবস্থায় হাইকোর্টের প্রশ্ন বিষয়টিকে আবারও আলোচনার টেবিলে নিয়ে এসেছে।
সমাজ ও রাষ্ট্রে যখন কোনো সঙ্কট দেখা দেয় তখন অনেকসময় আদালতের সঠিক ও কার্যকর নির্দেশনায় তা দূর হয়। ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়া ও বিচারের জন্য এসে যেন দীর্ঘসূত্রতার শিকার না হয়, সেদিকে নিম্ন আদালতসহ দেশের সর্বস্তরের আদালতের নজর আছে বলে আমাদের বিশ্বাস। পরীমনির মামলার আইনগত ভিত্তিতে রিমান্ডের বিষয়টি কতোটা যৌক্তিক ছিল কি ছিল না, তা হয়তো আইন-আদালত সংশ্লিষ্টরা ভাল বলতে পারবেন। তবে এ ধরনের ঘটনার সাথে তুলনা করলে সাধারণ জনগণের সঠিক আইনী অধিকার পাওয়া বিষয়ে কিছুটা শঙ্কা জাগে।
ন্যায়বিচার প্রাপ্তি মানুষের মৌলিক অধিকার, আর মানুষের শেষ ভরসার স্থল বিচার বিভাগ। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার যুক্তিতর্ক সম্পন্ন করাসহ যৌক্তিক প্রেক্ষাপটে রিমান্ডের মতো পর্যায় ব্যবহারের মনোযোগী হতে হাইকোর্টের প্রশ্ন ও দৃষ্টিভঙ্গী থেকে শিক্ষা নেয়া যেতে পারে বলে আমরা মনে করি। তাহলেই দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগ আরও জোরালো এবং কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস।