চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

হত্যা মামলার পর টেকনাফের ওসি প্রত্যাহার

পুলিশের গুলিতে নিহত সাবেক সেনাকর্মকর্তা সিনহা রাশেদ খানকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আসামি হিসেবে নাম আসায় টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বুধবার রাতে বিষয়টি চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সদরদপ্তরের সংশ্লিষ্ট এআইজি পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ওসি প্রদীপ কুমারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা‌ এবিএম দোহা-কে নতুন দা‌য়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এর আগে বুধবার টেকনাফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারহার আদালতে ওসি প্রদীপসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে মামলা করেন নিহত রাশেদের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

ওই ঘটনায় জড়িত সব পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বুধবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছে সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের সমিতি রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)।

একই দিন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ কক্সবাজারে গিয়ে সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এরপর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, এই ঘটনায় যে এই ঘটনায় দায়ী হিসেবে যে বা যারা চিহ্নিত হবে, তারাই শাস্তি পাবে। এর দায় ব্যক্তির কোনো বাহিনীর না।

গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশেদের মা নাসিমা আখতারকে ফোন করে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দেন।

গত শুক্রবার রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)।

তার গাড়িতে থাকা তার সঙ্গী সিফাতের ভাষ্যমতে, কোনো জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই চেকপোষ্টে গাড়ি থেকে নামতে বলে চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে তাকে হত্যা করেন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই লিয়াকত আলী।

গত শুক্রবার দিবাগত রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা রাশেদ খান।

ঘটনার পর পুলিশের দাবি করে, ‘ওই সাবেক সেনাকর্মকর্তা তার ব্যক্তিগত গাড়িতে এক সঙ্গীসহ টেকনাফ থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন। চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করতে চাইলে তিনি বাধা দেন।

এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে সেনাকর্মকর্তা তার সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়।’

তবে পুলিশের এই দাবি মানতে পারেনি নিহতের পরিবার। তারা মনে করছেন, রাশেদকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ হত্যা করা হয়েছে।

পুলিশ আরও দাবি করে, সাবেক ওই সেনাকর্মকর্তার গাড়ি তল্লাশি করে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, কিছু গাঁজা ও দুটি বিদেশি মদের বোতল পাওয়া গেছে।

ঘটনার পর দুটি মামলা করে পুলিশ।

সিনহা রাশেদ খান ২০১৮ সালে সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছা অবসরে যাওয়ার পর ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। এই সময়টায় আরও তিন সঙ্গীকে নিয়ে ‘নীলিমা’ নামের একটি রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন তিনি।

ঘটনার দিন ডকুমেন্টারির শুটিংয়ের কাজ শেষে করে ওই রিসোর্টে ফিরছিলেন রাশেদ এবং তার এক সঙ্গী।