প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জীবনে স্বপ্ন থাকে একবার হলেও হজ পালন করার। চাকরি শেষে পেনশনের অথবা জীবনে তিল তিল করে জমিয়ে রাখা অর্থ দিয়ে হজে যাবার যাবতীয় প্রস্তুতি নেন। ইহকালের সব কিছু তুচ্ছ করে পরকালে আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের আশায় সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু ঢাকায় এসে শুনতে পান যাদের কাছে অর্থ দিয়েছিলেন মক্কা-মদিনায় যাবার, তারা সময় মত বাড়ি ভাড়াসহ নানা রকম আয়োজন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আর সেজন্য ভিসার আবেদন করতে পারেনি। যেহেতু ভিসা করা হয়নি, তাই হজে যাবার সুযোগ নেই। তখনই ঘটে যত বিপত্তি।
গত কয়েক বছর ধরেই এ রকম ঘটনা ঘটছে দেশে। আর পত্রপত্রিকায় দেখতে হয়েছে বয়স্ক মানুষদের কান্না আর আহাজারি। ঢাকায় এসে দিনের পর দিন হোটেলে বা আত্মীয়স্বজনের বাসায় থেকে শুধু হজ এজেন্সির অফিসে গিয়ে হা-হুতাশ করেছেন হজে যেতে না পেরে।
জানা গেছে, এ বছর ৬৪ হাজার ৫৯৯ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ঢাকা থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে ১৪ জুলাই এবং ফ্লাইট শেষ হবে ১৪ আগস্ট। হজ শেষে ফিরিয়ে আনতে সৌদি আরব থেকে ফ্লাইট শুরু হবে ২৭ আগস্ট, শেষ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।
ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সির সমন্বয় না থাকলে এ বছরও ফ্লাইট বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা গেছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে দেখা গেছে, কিছু অতি মুনাফালোভী এজেন্সি সময় মতো সৌদিতে বাড়ি ভাড়া নেয় না, পরিবহন ও অন্যান্য সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করে না। আর এসব কার্যক্রম সময় মতো না করায় ভিসার ব্যবস্থা করতে পারে না। যার খেসারত দেয় হজযাত্রীরা।
সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, এখন থেকেই হজ এজেন্সিগুলোকে সতর্ক করে দেয়া দরকার, যেন একজন বয়স্ক মানুষ হজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ঢাকা এসে দুর্ভোগে না পড়েন।
গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের ঘোষিত ফ্লাইট শিডিউল অনুযায়ী ২০ মে’র মধ্যে ফ্লাইট বুকিং সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সব হজ এজেন্সিকে। বুকিং সম্পন্ন করার পর এয়ারলাইন্সগুলোর কাছ থেকে প্রত্যায়নপত্র সংগ্রহ করে হজ অফিসে জমা দিতে বলা হয়। ৯ মে ওই নির্দেশনা দেয়া হলেও ২০ মে’র প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে পারেনি হজ এজেন্সিগুলো। এসব কারণে ফ্লাইট বিপর্যয়ের ব্যাপারে শঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স।
তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ হজ এজেন্সিগুলোর প্রতি হুঁশিয়ারি জারি করা হোক।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)