দুই বাসের রেষারেষিতে কলেজছাত্র রাজীবের নিহত হওয়ার পর আদালতের কঠোর হস্তক্ষেপের পর সড়কে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছিল। ঘাতক বাসগুলোকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশসহ শুনানিতে তীর্যক মন্তব্য করেছেন আদালত। তবে সেই আলোড়নের মধ্যেই একই কায়দায় নিহত হয়েছেন আরেক যুবক নাজিম উদ্দিন। এবার ঘটনাস্থল রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। ঘাতক মনজিল এবং শ্রাবণ পরিবহন। ফ্লাইওভার দিয়ে গুলিস্তানের দিকে মটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন নাজিম উদ্দিন। একই সময়ে ফ্লাইওভারে মঞ্জিল ও শ্রাবণ সুপার পরিবহনের দুটি বাস মরিয়া—কে যাবে কার আগে। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার এক পর্যায়ে শ্রাবণ সুপার পরিবহনের বাসটি নাজিমের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে তিনি ছিটকে ফ্লাইওভারের রাস্তায় পড়ে যান, তারপর বাসটি নাজিম উদ্দিনের বুকের ওপর দিয়ে চলে যায়। সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বৃহস্পতিবার নিহত হওয়ার মাত্র ৩ দিন আগে বাবা হয়েছিলেন নাজিম উদ্দিন। এভাবেই প্রতিনিয়ত সড়কে কত প্রাণ অকালে ঝরে যায়, সদ্যজাত কত সন্তান তাদের বাবা-মা হারায় তার কোনো হিসাব নেই। কারণ সব দুর্ঘটনার খবর স্বাভাবিকভাবেই গণমাধ্যমে উঠে আসে না। কিন্তু চোখের সামনে এসব ঘটনা ঘটলেও এ নিয়ে যেন সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথাব্যথা নেই। সড়কে হত্যাকাণ্ড বন্ধে সরকারের কোনো জোরালো ভূমিকা আমরা দেখছি না। এটা অবশ্যই দুঃখজনক। চালক-সহকারীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ, নিয়মিত কাউন্সেলিং এবং সবশেষে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা উচিৎ বলে আমরা মনে করি। এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের মধ্যেও সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে ঈদের আগেই দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে।