স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে স্বাস্থ্যখাতের সফলতা নিয়ে ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর: বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের বিকাশ’ নামের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ।
শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। বইটি প্রকাশ করছে প্রথমা প্রকাশন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ডা. জহিরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা); মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মালেকা বানু। বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, এবং সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এর উপদেষ্টা কমিটির আহবায়ক ড. রওনক জাহান।
এই গ্রন্থে দেশি ও প্রবাসী ৯৯ জন জনস্বাস্থ্যবিদ, গবেষক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, শিক্ষক এবং সাংবাদিক তাদের লেখনীর মাধ্যমে গত পাঁচ দশকে স্বাস্থ্য খাতে কী কী পরিবর্তন এসেছে, কতটুকু অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, এবং তা প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় কতটা অনন্য তা তুলে ধরেছেন।
সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা) স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর একটি বড় মাইলফলক। আর বইটি স্বাস্থ্য খাতে একটি দলিল। আমাদের মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমেছে। কিন্তু স্বাস্থ্যে যে বৈষম্য বাড়ছে, সেটি খুবই দুঃখজনক। এ জন্য এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ জন্য একটি স্বাস্থ্য কমিশন জরুরি।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এসেছে। আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য, জেলা সদর হাসপাতালসহ অনেক কিছু নির্মাণ করছি যা অনেকের কাছে বিস্ময়। এতে করে বিশ্বে আমাদের স্বাস্থ্য নিয়ে ইতিবাচক ধারণা হয়েছে।
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যে মোট ব্যয়ের ১৫ শতাংশ হওয়া দরকার, কিন্তু আমাদের ব্যয় মাত্র ৬ শতাংশ। এটা দুঃখজনক। এছাড়াও আমাদের সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা নেই বললেই চলে। আবার হাসপাতালগুলোতে নানা অব্যবস্থাপনা আর দুর্নীতি আছেই। অনেক দামি দামি একুইপমেন্ট কেনা হয়, কিন্তু সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় না। হাজারো অনিয়মেও স্বাস্থ্যখাতের এই এগিয়ে চলা এক বিস্ময়। ’
বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. রওনক জাহান বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় চিকিৎসাসেবায় আমরা অনেক পিছিয়ে। আমাদের দক্ষিণপূর্ব দেশগুলোর দিকে তাকেলে আমরা দেখতে পাই আমাদের অবস্থান কোথায় । থাইল্যান্ড গত ৬০ বছরে সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পেরেছে। কীভাবে পেরেছে, সেটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, আমাদের দেশের এনজিও খাত স্বাস্থ্যখাতের বিবর্তন করেছে। ব্র্যাকসহ কিছু প্রসিদ্ধ এনজিও বাংলাদেশের কলেরা প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, অতীতের তুলনায় আমাদের হেল্থ পলিসিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এছাড়াও আমাদের আমাদের দেশে স্যানিটেশন এর যে পরিবর্তন দেখা যায় তা পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় প্রশংসনীয়।
তিনি সার্বিকভাবে বইয়ের বিষয়বস্তুর অনেক প্রশংসা করেন এবং বলেন স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন লগ্নে এই বই এক অনবদ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।