সংবাদটি স্বস্তির হলেও বাস্তবে স্বস্তির মত কোনও অবস্থায় নেই বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি। গত চার মাস পর আজ করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে কম বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় সাড়ে চার মাস পর আজ দৈনিক মৃত্যু ২০ এর নিচে নামল। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে কম মৃত্যু ছিল গত ২৮ মে। ঐ দিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৫।
এ নিয়ে দেশে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত মানুষের মোট সংখ্যা দাঁড়াল ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭০। করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৭৭। মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৮৯ হাজার। দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। আজ মোট ১১ হাজার ২৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এ বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম শনাক্তের খবর জানানো হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শুরুর দিকে দেশে সংক্রমণ হয়েছে ধীর গতিতে। মে জুন মাসের মাঝামাঝি সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে শুরু করে। জুনে সংক্রমণ পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করে। মাস দুয়েক ধরে দৈনিক নতুন রোগির সংখ্যা কমেছে। এ সময়ে সংক্রমণ শনাক্তের পরীক্ষার সংখ্যাও আগের চেয়ে কম হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন: বেশ কিছুদিন ধরে সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হলেও এখনও তা স্বস্তিকর মাত্রায় আসেনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনও দেশে শনাক্তের হার টানা তিন সপ্তাহ ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন: টিকা না আসা পর্যন্ত নতুন এই ভাইরাস প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। কিন্তু এখন স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে শিথিলতা দেখা যাচ্ছে মানুষের মাঝে। এতে সংক্রমণ আবার যেকোনো সময় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
গত মার্চ মাস থেকে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের পর এই প্রথম মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে কম হলেও আশঙ্কা থেকে গেছে এখনও বড়মাত্রায়। দেশে শনাক্তের সংখ্যা কমে গেছে বলে মৃত্যুর হারও কমে গেছে এমনটাই মনে করছেন অনেকে। আমরা মনে করি আমরা এখনও ঝুঁকিমুক্ত নই। করোনা নিয়ন্ত্রণে এসেছে এমনটাও বলা যাবে না। সুতরাং মৃত্যুর হার কমে গেছে বলে আত্মতৃপ্তির অবকাশ নেই। এখন দরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা এবং সরকারকে এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয় । কেবল তখনই আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবো।