টাঙ্গাইলে স্কুল মাঠের মধ্য দিয়ে পাকা সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ঘাটাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সড়ক নির্মাণের ফলে স্কুলটির খেলার মাঠ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
এতে কোমলমতি শিশুদের মানসিক বিকাশ ও খেলাধূলা যেমন বিঘ্নিত হবে তেমনি যখন তখন ঘটতে পারে প্রাণহানীর মতো দুর্ঘটনা। এমন অভিযোগে নির্মাণ বন্ধের আবেদন করেছে শিক্ষা অফিস।
পৌর মেয়র বলছেন, স্কুলের মাঠ নয় জনস্বার্থে খাস জমিতে সড়ক নির্মাণ করছেন তিনি। তবে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইয়াসমীন বলেন, অনুমতি ছাড়া সরকারি ভূমিতে স্থাপনা করা আইনত অবৈধ।
দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে শিশুদের খেলাধূলার মাঠ। আবার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই নেই শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অন্যতম উপাদান খেলাধূলার পর্যাপ্ত স্থান। এই যখন পরিস্থিতি তখন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল পৌর এলাকার রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক চিলতে মাঠটি যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। বহু পুরাতন স্কুলটি স্থানীয়দের ৫০ শতক দানকৃত জমিতে ১৯৩৮ এত সালে গড়ে উঠে। যার ২৬ শতাংশ দলিল সংরক্ষিত আছে স্কুলের নামে। অবশিষ্ট অংশ সরকারি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্তি হলেও দখল স্কুলের অনুকূলে। সেখানে অনুমতি ছাড়াই মাঠকে দুই ভাগ করে সড়ক করছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌর মেয়রসহ এ গ্রামের কয়েক শতাধিক বাসিন্দারা যাতায়াতের সহজ পথ হিসাবে স্কুলের মাঠটি ব্যবহার করে থাকেন। এজন্য মাঠ ও সড়ক দুটোই চান তারা।
অভিযোগকারী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মিরুল হুদা বলেন, মাঠকে দুই ভাগ করা হলে খেলাধূলা বিঘ্নিত হবে। পাশাপাশি দুর্ঘটনাজনিত কারণে শিশুদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তাই মাঠের মধ্যে সড়ক নির্মাণ না করে বিকল্প সড়ক নির্মাণের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর করা হয়েছে।
যদিও সরকারি ভূমি নকশায় স্কুলের ওই ৫০ শতকের মধ্যে কোন সড়ক নেই। এর পরও পৌর মেয়র শহীদুজ্জামান খান দাবি করেন, সকল মহলের সাথে পরামর্শ করে ও গ্রামবাসীর স্বার্থে খাস ভূমি দিয়ে সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনের মৌখিক অনুরোধে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, স্কুলের জমির কিছু অংশ খাস খতিয়ানে পড়েছে। সরকারি ভূমিতে অনুমতি ছাড়া স্থাপনা নির্মাণ অবৈধ। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পূর্বপাশ থেকে জামুরিয়ার ভূঞাপুর লিংকরোড পর্যন্ত ৭৫০ মিটার বিতর্কিত এই সড়কটি ১ কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছে ঘাটাইল পৌরসভা।