এই প্রথম সৌরজগতের বাইরে একটি প্রাকৃতিক উপগ্রহ বা চাঁদ আবিষ্কারে সফল হয়েছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। আকারে এটি প্রায় আমাদের নেপচুনের সমান বড়।
এই ‘এক্সোমুন’ (সৌরজগতের বাইরের চাঁদ) পৃথিবী থেকে ৮ হাজার আলোকবর্ষ দূরে কেপলার-১৬২৫বি নামের একটি অতিকায় গ্যাস দানব গ্রহের চারদিকে ঘুরছে। উপগ্রহটির নাম দেয়া হয়েছে কেপলার-১৬২৫বি-আই।
চাঁদটি তার গ্রহ থেকে প্রায় ৩০ লাখ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে প্রদক্ষিণ করছে। গ্রহ-উপগ্রহ দু’টোই দু’টি গ্যাস দানব।
সৌরজগতে চাঁদ বা প্রাকৃতিক উপগ্রহের কোনো অভাব নেই। আমাদের নিজেদের গ্রহ পৃথিবীরই আছে একটা। এছাড়া মঙ্গলগ্রহের দু’টি, বৃহস্পতির ৭৯টি, শনির ৫৩টি, ইউরেনাসের ২৭টি এবং নেপচুনের ১৩টি স্বীকৃত চাঁদ রয়েছে।
এর পাশাপাশি শনির আরও ৯টি এবং নেপচুনের একটি চাঁদ যথেষ্ট তথ্যের অভাবে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্বীকৃতির অপেক্ষায় আছে।
আমাদের সৌরজগতে চাঁদ জিনিসটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয় হলেও এ পর্যন্ত সৌরজগতের বাইরে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পরও বিজ্ঞানীদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। কেননা ছোট আকারের কারণে এত দূর থেকে নক্ষত্র ও গ্রহের পাশে তাদের দেখা সম্ভব হয় না।
অবশেষে সৌরজগতের বাইরে একটি প্রাকৃতিক উপগ্রহের প্রমাণ পেলেন বিজ্ঞানীরা। নাসার কেপলার স্পেসক্রাফট থেকে পাওয়া তথ্যে জিনিসটি প্রথম ধরা পড়ে। পরে হাবল টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে জ্যোতির্বিদ্যার সহকারি অধ্যাপক এবং এই সম্ভাব্য এক্সোমুনের অন্যতম আবিষ্কর্তা ডেভিড কিপিং বলেন, ‘এটাই আমাদের সৌরজগতের বাইরে পাওয়া প্রথম উপগ্রহ।’
‘যদি হাবল দিয়ে আরও কয়েক দফা ফলোআপ পরীক্ষায় কেপলার-১৬২৫বি-আইয়ের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়, তবে এটি গ্রহমণ্ডলের গঠন ও বিবর্তন সম্পর্কে নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের দেবে। হয়তো এর মধ্য দিয়ে গ্রহের চারিদিকে উপগ্রহ কীভাবে গঠিত হয়, এ সম্পর্কিত তত্ত্বগুলোও বিশেষজ্ঞরা নতুনভাবে যাচাইবাছাই করে দেখতে পারবেন।’
কিপিং আরেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যালেক্স টিচির সঙ্গে মিলে চাঁদটি আবিষ্কার করেছেন। তাদের এ সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিবেদন ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তবে তাদের মতে এই গ্রহমণ্ডলটিকে ভালোভাবে বোঝার জন্য আরও বেশি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা প্রয়োজন।