ওয়ানডে ক্রিকেটে দূর্দান্ত পারফরম্যান্সের পাশপাশি টেস্ট ম্যাচে প্রথম একাদশ নির্বাচন কিংবা অন্য সিদ্বান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টর একের পর এক চমক উপহার দেয়ার ধারা অব্যাহত চট্টগ্রাম টেস্টেও। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টের প্রথম একাদশ কি হবে, এ নিয়ে অধিনায়ক-কোচের দ্বিধা ম্যাচ শুরুর ২৪ ঘন্টা আগেও ছিলো। থাকাটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়, কারণ বৃষ্টির দাপটে উইকেটের পরিবর্তনশীল আচরণ দেখেই হয়তো শেষ মুহূর্তে সিদ্বান্ত নেয়ার চিন্তা ছিলো টিম ম্যানেজমেন্টর। কিন্তু শেষ মুহূর্তের সেই সিদ্ধান্তও চমকে দিলো সবাইকে।
সাত ব্যাটসম্যান আর চার বোলারের কম্বিনেশনে দল সাজাতে গিয়ে বাংলাদেশের টিম-ম্যানেজমেন্ট প্রথম একাদশের বাইরে রেখেছে সদ্য শেষ হওয়া ওয়ানডে সিরিজের সেরা পারফরমার সৌম্য সরকারকে! দুরন্ত ছন্দে থাকা সৌম্য প্রথম একাদশে নেই, এই ব্যাপারটিই চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের শুরুর চমক। এতোটাই চমক যে বাংলাদেশের ৭৮তম ক্রিকেটার হিসেবে বাঁ-হাতি পেস সেনসেশন মুস্তাফিজের টেস্ট অভিষেকও মনোযোগের কেন্দ্র পৌঁছুতে পারেনি টাইগার-ভক্তদের।
ওয়ানডে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে সৌম্যর ম্যাচ জেতানো ৮৮ ও ৯০ রানের দুই ইনিংসেই বাংলাদেশ পেয়েছে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়। টানা দুই ম্যাচ ও সিরিজের সেরা পারফরমার সৌম্য সরকারের গায়ে ওয়ানডে ক্রিকেটারের তকমা ঝুলিয়ে দেয়ারও উপায় নেই। কারণ বাংলাদেশের শেষ তিন টেস্টেই প্রথম একাদশে ছিলেন এই বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার। এমনকি ভারতের সঙ্গে ফতুল্লা টেস্টে মোহাম্মদ শহীদের সঙ্গে বোলিং শুরু করেছিলেন সৌম্য। দূর্দান্ত ছন্দে থাকা সেই সৌম্যই কিনা বাদ পড়লেন সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে!
প্রথম একাদশ সাজানো নিয়ে বাংলাদেশের টিম-ম্যানেজমেন্টের খামখেয়ালিপনা এই প্রথম নয়। ভারতের সঙ্গে ফতুল্লায় শেষ টেস্টে একমাত্র পেসার শহীদকে নিয়ে প্রথম একাদশ সাজিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলো টিম-ম্যানেজমেন্ট। তবে বৃষ্টির দাপটে ফলো-অনে পড়েও বাংলাদেশ সেই টেস্ট ড্র করতে পারায় ব্যাপারটি নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি।
ভারতের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঢাকায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টস জিতে ফিল্ডিং নেয়ার সিদ্ধান্তও অবাক করেছিলো অনেককে। সেই ভুলের মাশুলও দিতে হয়েছিলো ৩২৮ রানে ম্যাচ হেরে, সেই হারেই পাকিস্তান পেয়েছিলো বাংলাদেশ সফরের একমাত্র জয।
চট্টগ্রাম টেস্টে দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার তাইজুল ও জুবায়েরের সঙ্গে দুই পেইসার শহীদ ও মুস্তাফিজসহ চার স্পেশালিস্ট বোলারকে নিয়ে প্রথম একাদশ সাজানোর সিদ্ধান্তটি যথেষ্ট ইতিবাচক ও সাহসী। কিন্তু তাই বলে সৌম্য সরকারের মতো ইনফর্ম ব্যাটসম্যানকে প্রথম একাদশের বাইরে রেখে দল সাজানোর সিদ্ধান্ত অবশ্যই দুঃসাহসী এবং ভুল।
তিন টেস্টে পাঁচবার ব্যাট করে সৌম্য আহামরি কিছু করেননি সত্যি। তবে একেবারে ব্যর্থও যে তিনি তা বলার উপায় নেই।
সেরা একাদশ নিয়ে এতো আলোচনার মধ্যে অনেকে হয়তো খেয়ালই করেননি যে মুস্তাফিজের পাশাপাশি এই টেস্ট মনে রাখবেন আরো একজন। তিনি ইংলিশ আম্পায়ার মাইকেল গফ। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের এই সাবেক অলরাউন্ডারের সাদা অ্যাপ্রনে টেস্ট অভিষেক হয়েছে এই ম্যাচে।