চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সোহেল রানা দুইবার ব্রাজিল, একবার আর্জেন্টিনা

‘স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর আগে এখনকার জহরুল হক হল আর তখনকার ইকবাল হলের ভিপি ছিলাম। ছিলাম ইকবাল হল ফুটবল টিমের ক্যাপ্টেন। চুটিয়ে খেলেছি। রাইট ইনে খেলেছি। এখনতো পজিশনগুলোর নাম চেঞ্জ হয়ে গেছে। সেই দলের ছবি আমার কাছে এখনও আছে। যতবার চোখে পড়ে ততবার স্মৃতিতাড়িত হই।’

এভাবেই নিজের ফুটবলের স্মৃতি নিয়ে বলে চলেন ‘জীবন নৌকার’ নায়ক মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা।

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের এ প্রযোজক ‘মাসুদ রানা’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন সোহেল রানা নামে। আন্ডারটোন অভিনয়ে মাত করেন চলচ্চিত্র ভুবন। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে অস্ত্র হাতে যোদ্ধা এ অভিনেতা-প্রযোজক-পরিচালক সোহেল রানা আদ্যেপান্ত একজন স্পোর্টসম্যানও।

ফুটবল অন্তঃপ্রাণ। বিশ্বাকপ ফুটবল, ফুটবল ভাবনা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেন চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বকাপ ফলো করি মূলত ’৯৪ সাল থেকে। গত ছয়টি বিশ্বকাপে ৪টি দলকে সাপোর্ট করেছি। ২ বার ব্রাজিল, ১ বার করে আর্জেন্টিনা, স্পেন, উরুগুয়ে ও জার্মানী। এবার নতুন চ্যাম্পিয়ানের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। লক্ষণ তাই বলে। তবে পুরনোদের কেউ যদি তা পায়ও, তবে তাদের অনেক ঘাম ঝরাতে হবে। কারণ ছোট দল যাদের বলা হয় বিশ্বকাপে তদের কিন্তু অনেক উন্নতি হয়েছে শারীরিক সক্ষমতা, কৌশলে এবং দক্ষতায়।

কোরিয়ার মত দল মাত্র ১ গোল খায়। বড় দলগুলো তেমন বদলাতে পারেনি নিজেদেরে। শুধু নামের ভারে চলবেনা এ বিশ্বকাপ শুরু থেকে বুঝিয়ে দিচ্ছে। এই যেমন জার্মানিকে মনে হল সেই গত বিশ্বকাপের কৌশলে তারা খেলছে। পরিকল্পনা নেই বলে মনে হল। ৭ গোলে একটা দলকে হারানো জর্মানি শুরু করে ১ গোলে হেরে, ভাবলে অবাক হচ্ছি। মুলারকে রাখছেন আপনি দলে অথচ সেই মুলার কি আছে এখন? মূলা হয়ে গেছে। আপনার একজন স্কোরার তো লাগবে। ধারাবাহিকতা লাগবে।’

চিকিৎসক স্ত্রী ডা. জিনাত পারভেজ এর সঙ্গে অভিনেতা-প্রযোজক-পরিচালক মাসুদ পারভেজ

পরিবারে কে কোন দলের সমর্থক প্রশ্নে ‘কমান্ডার’ অভিনেতা সোহেল রানা বলেন, ‘আমার একমাত্র সন্তান মাশরুর পারভেজ জিবরান ফুটবল ভালোবাসে না। তার সমস্ত ভালোবাসা ফিল্ম নির্মাণে। আর আমার স্ত্রীও ফুটবল দেখেন না। পেশায় চিকিৎসক। ফলে আমার পরিবারে আমি একাই ফুটবল সমর্থক। বিশ্বকাপ ভোক্তা।’

বলে চলেন ‘এপার ওপার’ নায়ক, ‘এর আগের বিশ্বকাপ সেভাবে ফলো করতে পারিনি বহুমুখি ব্যস্ততায়। তবে ফিল্মে থাকতেও ফুটবল নিয়ে নায়ক-প্রযোজক বা পরিচালক হিসেবে ভয়াবহ বন্যাগুলোতে আমরা ফুটবল খেলে যে অর্থ আয় হয়েছে তা প্রেসিডেন্ট এর তহবিলে জমা দিয়েছি। আমার অভিনীত ‘পেনশন’ সিনেমায় ফুটবল নিয়ে দৃশ্য ছিল বলে একটু একটু মনে পড়ে।

দেশের ফুটবলের গতিপ্রকৃতি সেভাবে অনুসরণ করা হয়নি কখনও। তবে এখন মেয়েদের ফুটবলের সাফল্যের বিষয়টি জানি। এটা নিয়ে আমার নিজের একটি পর্যবেক্ষণ মেয়েদের ফুটবলের সাফল্যের সুতিকাগার যে কলসিন্দুর। তার কারিগরকে কি আমরা যোগ্য সম্মান দিয়েছি। অপ্রাসঙ্গিক হলেও এখানে আরেকটি প্রসঙ্গ তুলে ধরি তা বাংলাদেশের প্রায় সমান সাগরসীমা বাংলাদেশ অর্জন করার যে মূল কারিগর রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশীদ আলম। তার কোন সম্মান করেছি আমরা? রাষ্ট্রীয় ভাবে তার তো ভাস্কর্য হওয়া উচিত। যোগ্যদের আমরা সে অর্থে কখনও যথার্থ সম্মান করি। আর সে কারণেই সব ক্ষেত্রে আমাদের অবনমন। তা সে রাজনীতি, খেলাধুলা আর চলচ্চিত্র যেখানেই হোক।’