বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলাদেশ ও সমৃদ্ধ নেপাল গঠনে বাংলাদেশ-নেপাল একত্রে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন: মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে নেপাল আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। নেপালের কাছ থেকে আমরা নানাভাবে সহযোগিতা পেয়েছি। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র দিয়েও সাহায্য করেছিলো নেপাল। বিশ্বের যেসব দেশ বাংলাদেশকে প্রথমে স্বীকৃতি দিয়েছিলো নেপাল তাদের মধ্যে অন্যতম। এজন্য নেপাল ও তাদের জনগণের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
শেখ হাসিনা আরও বলেন: নেপাল ও বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক অবস্থানসহ অনেক কিছুই প্রায় অভিন্ন। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতেও আমাদের অবস্থান এক ও অভিন্ন। আমরা একত্রে কাজ করে গেলে এই অঞ্চলের অনেক সংকটের সমাধান করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের ষষ্ঠ দিনে নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারির উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য, নৌ, সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পর্যটন ও পানি ব্যবস্থাপনায় পারস্পরিক সহযোগিতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে অনেক চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এর বাইরেও আমরা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য পদক্ষেপে নিয়েছি। যার ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো লাভবান হবে ও উন্নতি করবে।
তিনি বলেন, নেপালকে আমরা আমাদের সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট ব্যবহার, মংলা ও চট্টগ্রাম পোর্ট ব্যবহারের সুযোগ ও অনুমতি দিয়েছি। এর ফলে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে যেসব বাধা রয়েছে সব দূর করে হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সার্বিক উন্নয়নে আমরা একসাথে কাজ করবো। এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ এতে লাভবান হবেন।
বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সব সময় বঞ্চিত মানুষের জন্য লড়াই করেছেন। তিনি অসহায় মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যখন তিনি অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। থামিয়ে দেয়া হয় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। কিন্তু একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর আবারও উন্নয়নের ধারায় ফিরে দেশ। দীর্ঘদিন সরকারের থাকার ফলে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে পারছি। জাতির পিতা দেখানোর পথ ধরে হেঁটে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
এসময় তিনি জলবায়ু পরিবর্তনরোধকে গুরুত্ব দেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও নেপাল একত্রে এক্ষেত্রে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একই সাথে দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল সংখ্যক মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বাস করছে জানিয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।