ধর্ষণ প্রতিরোধ যাত্রা-(এ্যান্টি রেপ মার্চ) ধর্ষণ বন্ধে সমাজ ও রাষ্ট্রের ভূমিকা জোরদার ও প্রচারাভিযানের পাশাপাশি শক্তিশালী নাগরিক ফোরাম তৈরি করতে বিভিন্ন পেশা, শ্রেণি ও বয়সের মানুষকে নিয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে।
শনিবার সকালে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকার সামনে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হকসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি, পেশাজীবী শ্রেণির প্রতিনিধি ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা ধর্ষণ বন্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগের কথা বলেন। পাশাপাশি ধর্ষণ প্রতিরোধে আইনকে আরো শক্তিশালী করা এবং দ্রুত বিচার আইনে ধর্ষণের মামলা নিষ্পত্তি করার দাবিও জানান তারা।
সমাবেশে হাসনাত কাইয়ুম বলেন: ‘আমরা যদি সকল মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ বন্ধ হয়ে যাবে। পাশাপাশি সামাজিক অনুশাসন আমাদের শক্তিশালী করতে হবে যা ধর্ষণ প্রতিরোধে সহায়তা করবে।’
ফাহমিদুল হক বলেন: ‘ধর্ষণ একটা মারাত্মক ব্যাধি। এটা দুর করতে রাষ্ট্রের যে আইন-কানুন আছে তাই যথেষ্ট নয়। এটা একটা সামাজিক ব্যাধি। এর মনস্তাত্ত্বিক দিক আছে, নারীর উপরে পুরুষের ক্ষমতা প্রদর্শনের দিক আছে। এই সমাজতাত্ত্বিক ও মনস্তাত্ত্বিক ব্যাধিগুলো দুর করার জন্য সমাজের সচেতন মানুষদের গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে। সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই সামাজিক ব্যাধি ও দূষণ দুর হতে পারে।’
রিফাত ফাতিমা বলেন: ‘ধর্ষণ বন্ধে পারিবারিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবারের পুরুষরা যেন শিশুদের সামনে নারী সদস্যদের ছোট করে কথা না বলেন।’
সমাবেশে জাকিয়া শিশির বলেন: ধর্ষণের ধারাবাহিক প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আজকে আমরা বিপণিবিতানের সামনে দাঁড়িয়েছি। কারণ আমরা দেখেছি যে বিপণিবিতানগুলোতেও যৌন হয়রানী বেড়ে চলছে। সারা দেশের মানুষ যদি এর প্রতিবাদে সোচ্চার না হয় তাহলে ধর্ষণ বন্ধ হবে না।
ধর্ষণ বন্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়া উচিত এবং এজন্য দেশব্যাপী গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেন ফেরদৌস আরা রুমী।
বাকী বিল্লাহ বলেন: ‘ধর্ষণের পরিমাণ বেড়েই চলছে এবং এর প্রতিরোধে কার্যকর সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন প্রয়োজন।’
গত ২ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ঢাকায় ‘ধর্ষণ প্রতিরোধ যাত্রা’-(এ্যান্টি রেপ মার্চ) একক বা সম্মিলিত উদ্যোগে উত্তরা, গুলশান, বসুন্ধরা, ৩০০ ফিট, পল্লবী, শ্যামলী, মোহাম্মপুর, ধানমন্ডি, ফার্মগেট, ইডেন কলেজ প্রভৃতি স্থানে মানববন্ধন করেছে। এছাড়া এই ক্যাম্পেইন ছড়িয়েছে ঢাকার বাইরে তিনটি জেলায় নারায়নগঞ্জ, কুমিল্লা ও কুষ্টিয়াতে।
ক্যাম্পেইনে অনুপ্রাণিত হয়ে নেপাল, ভারত, নেদারল্যান্ড, সুইডেন, উগান্ডা ও কানাডায় বাংলাদেশি নাগরিকসহ ভিনদেশীরাও একক বা যৌথ আয়োজনে সড়ক ও সামাজিক গণমাধ্যমে নানাধরনের প্রচারণায় অংশ নিয়েছে।