চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সেফ হোমে থাকাকালীন জন্ম নেয়া শিশুকে নিয়ে মা যাবে স্বামীর ঘরে

আড়াই মাস বয়সী শিশুসহ মাকে স্বামীর জিম্মায় দিতে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ আদেশের ফলে সেফ হোমে থাকাকালীন জন্ম নেয়া শিশুটিকে নিয়ে ওই মা যেতে পারবেন তার স্বামীর ঘরে।

স্বামীর আবেদনের শুনানি নিয়ে ও স্ত্রীর মতামতের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশ দেন।

আদালতে স্বামীর আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. তারেক আজিজ ও সজল আহমেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.সারওয়ার হোসেন ।

ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়: ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে পালিয়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের ওই কিশোরী পরিবারের অমতে তার প্রেমিককে বিয়ে করেন। বিয়ের কাবিনে মেয়েটির বয়স দেখানো হয়েছে ১৮ বছর। এরপর ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করা হয়। সেই মামলায় মেয়েটির বয়স দেখানো হয়েছে ১৩ বছর ১১ মাস। তবে জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী কিশোরীর বয়স তখন ২১ বছর। অন্যদিকে মামলার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মেয়েটি তার বয়স ১৬ বছর বলে উল্লেখ করেছেন।

একপর্যায়ে ২০২০ সালের ২৬ মে ওই মেয়ের স্বামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হলে ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠায়। সেদিন কিশোরীটির মা তার মেয়েকে নিজের জিম্মায় নিতে আবেদন করেন। কিন্তু পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়া মেয়েটি পরিবারের কাছে ফিরতে না চাইলে ট্রাইব্যুনাল তাকে সেফ হোমে (গাজীপুরের শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে) পাঠানোর আদেশ দেন। অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর হাইকোর্টে মেয়েটির স্বামী জামিন আবেদন করেন। এরই মধ্যে গত ২৭ অক্টোবর গাজীপুরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে মেয়েটি একটি সন্তান জন্ম দেন।

একপর্যায়ে গত ২০ অক্টোবর স্বামীকে জামিন দেন হাইকোর্ট। জামিনে মুক্তি পেয়ে স্বামী নিজের স্ত্রী ও সন্তানকে নিজের জিম্মায় পেতে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। স্ত্রী ও সন্তানকে নিজ জিম্মায় পেতে স্বামীর করা সে আবেদন গত ১০ নভেম্বর নামঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে স্বামী। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে গাজীপুরের শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালিকা) তত্ত্বাবধায়ককে মেয়েটি ও তার শিশু সন্তানকে আদালতে নিয়ে আসতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

সেই আদেশ অনুসারে বৃহস্পতিবার মেয়েটি ও তার শিশু সন্তানকে হাইকোর্টে আনা হয়। এরপর আদালত ছোট্ট কন্যাশিশুসহ ওই মাকে স্বামীর জিম্মায় দিতে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দেন।