এসএ গেমসে স্বর্ণপদকবিজয়ী মাবিয়া আক্তার সীমান্তের গৌরবময় এবং আবেগঘন মুহূর্তের বর্ণনায় এদেশের মেয়েদের অগ্রগতির কথা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সমাজত্ত্ববিদ এবং লেখক আমিনুল ইসলাম।
ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে আমিনুল লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজছে, আর মেয়েটা ক্রমাগত কেঁদে চলেছে। দক্ষিণ এশিয়ার মাঝে শ্রেষ্ঠ হয়ে কোথায় আনন্দে হাসবে; সেটা না করে মেয়েটি কেঁদে চলেছে। বলছিলাম আমাদের মেয়ে মাবিয়া আক্তারের কথা।’
‘আজ মেয়েটি স্বর্ণ পেয়েছে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে। যেই দেশে মেয়েদের দেখলেই পুরুষদের মনে হয়- “একটা মাল!”; সেই দেশের জাতীয় পতাকা এবারের দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে ভারতের মাটিতে প্রথম উড়িয়েছে কোন পুরুষ নয় একটা মেয়ে।’
তিনি আরো লিখেন, ‘আমার মনে আছে সেই দিনের কথা যখন বলা হয়েছিলো -“মেয়েদের কাজ হচ্ছে পুরুষের সেবা করা। ওদের ঘরের বাহিরে যাওয়ার দরকার কি!” আমার মনে আছে যখন বলা হয়েছিলো -“মেয়েরা হচ্ছে তেঁতুলের মতো। দেখলেই মুখে জল আসে!” তবে এসবের কিছুই আমাদের মেয়েদের দমিয়ে রাখতে পারেনি, পারবেও না।’
আমিনুল লিখেন, ‘ভারতের আসামে দক্ষিণ এশিয়ান গেমস হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এটাই খেলার জগতে সব চাইতে বড় ইভেন্ট। বাংলাদেশ এই পর্যন্ত সব মিলিতে ১৭টা পদক পেয়েছে। এর মাঝে আমাদের মেয়েরা পেয়েছে ১০টা আর ছেলেরা পেয়েছে ৬টা। সব মিলিয়ে স্বর্ণ পেয়েছে এখন পর্যন্ত ২টা। এর দুটোই পেয়েছে আজ মেয়েরা। একটা সাঁতারে আরেকটা ভারোত্তোলনে। অর্থাৎ মেয়েরা সব দিক দিয়েই এগিয়ে আছে।’
তিনি লিখেন, ‘মেয়েদের দেখলেই যাদের মুখে জল আসে; তাদের মুখে চুনকালি দিয়ে আমাদের মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। তারা খেলায় স্বর্ণ জিতছে, পৃথিবীর সব উঁচু পর্বত জয় করছে, ইন্ডাস্ট্রি’তে কাজ করে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিচ্ছে। এই মেয়েরাই একদিন আমাদের সর্বোচ্চ শেখরে নিয়ে যাবে। সেই দিনও হয়তো কিছু লোক (পুরুষ) বলবে -মেয়েদের কাজ হচ্ছে পুরুষের সেবা করা! ইউ লুজারস!’