চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সেই আলোকিত প্রত্যাবর্তন

১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসন শেষে শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন।

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার সময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে বেঁচে যান।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর নেমে আসে ঘোর অমনিশা। সামরিকজান্তা আইন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার নিষিদ্ধ করে। দেশে আওয়ামী লীগের ওপর নেমে আসে দমন নির্যাতন। সেইসব দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছিল কাণ্ডারীবিহীন। কোনো আন্দোলন সংগ্রাম দূরের কথা বঙ্গবন্ধুর নামও মুখে আনতে পারত না এই দেশের জনগণ। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও দেশে না ফিরতে হুমকি দেয়া হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেদিন তিনি তার মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন।

এর আগে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।

প্রত্যাবর্তনের দিন শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত প্রায় ১৫ লাখ মানুষের হৃদয় ছোঁয়া ভালবাসার জবাবে তিনি বলেছিলেন: বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়ার লক্ষ্যে আমি দেশে এসেছি। সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই।

তারপর বহু চড়াই উৎড়াই পার হয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে রাজপথে থেকে এই দেশের মানুষের অধিকার আদায় করেছেন। যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। আজকের বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন অর্জনে রয়েছে তার অবদান।

আজ ৩৯তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে গণভবনে তিনি বলেন: ক্ষমতায় থেকে দেশের জন্য কাজ করার কারণেই মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে আওয়ামী লীগ। আর এ কারণেই শুধু দেশে নয় গোটা উপমহাদেশে আওয়ামী লীগ শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয় বরং একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যে বাংলাদেশ জাতির জনককে নৃশংসভাবে খুন করে অন্ধকারে পথে যাত্রা শুরু করেছিল তার বিপরীতে আজকের উজ্জ্বল বাংলাদেশের অবস্থান প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অবদান। তার সেই প্রত্যাবর্তন যে আলোকিত এক প্রত্যাশিত প্রত্যাবর্তন ছিল সেটা আজকে বাংলাদেশের জন্য একটি বার্তা।