মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা হিসেবে অং সান সু চির কিছু কর্মকাণ্ড ‘দুঃখজনক’ হলেও তার নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন নোবেল ফাউন্ডেশনের প্রধান লার্স হেইকেনস্টেন।
২০১৮ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার ঠিক এক সপ্তাহ আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শুক্রবার স্টকহোমে তিনি এ কথা বলেন।
নোবেল ফাউন্ডেশন প্রধান সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা দেখছি তিনি মিয়ানমারে যা করছেন তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে এবং আমরা মানবাধিকারের পক্ষে, এটা আমাদের অন্যতম মূলনীতি। তাই এ ঘটনায় (রোহিঙ্গা নিপীড়ন) সু চি যে পরিমাণ দায়ী, সেটা অবশ্যই খুবই দুঃখজনক।’
হেইকেনস্টেন জানান, সু চিকে পুরস্কারটি দেয়া হয়েছে বহু বছর আগে। পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি কী করেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার চিন্তাটা অযৌক্তিক এবং অর্থহীন। কেননা এই প্রক্রিয়া চালাতে হলে বিচারকদের চিরকাল নোবেল বিজয়ীদের গুণাগুণ নিয়েই আলোচনা করে যেতে হবে।
গত আগস্টে প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে’ ব্যাপক পরিসরে হত্যাকাণ্ড চালানোর অভিযোগ আনে। বলা হয়, সেনাবাহিনীর এই নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচতেই ৭ লাখেরও বেশি (বাংলাদেশ সরকারের হিসেবে ১১ লাখের কাছাকাছি) রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
বর্মি সেনাবাহিনীর এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা, এ বিষয়ে প্রথম দিকে একেবারেই উচ্চবাচ্য করেননি সু চি। পরে যতবার কথা বলেছেন, পক্ষ নিয়েছেন সামরিক বাহিনীরই।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে এ ধরনের বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন সু চি। সমালোচনা ও নিন্দার এক পর্যায়ে শুরু হয় তার নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার দাবি, যা তিনি ১৯৯১ সালে পেয়েছিলেন মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্দোলন ও তার শাস্তি হিসেবে গৃহবন্দী থাকার কারণে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মিয়ানমারের সরকারের মুখপাত্র জ হতে’কে সোমবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। গত মাসেই হতে জানিয়েছিলেন, তিনি ফোনে আর সংবাদমাধ্যমের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না। শুধু দু’সপ্তাহ পর পর সংবাদ সম্মেলনে সামনাসামনি কথা বলবেন।