২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে যে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার এবং তার সঙ্গে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানকে জড়িয়ে ভারতীয় সাংবাদিক সুবীর ভৌমিকের বক্তব্য ও লেখালেখিকে বিএনপির বিরুদ্ধে যৌথ প্রযোজনার ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার সকালে দলটির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, হঠাৎ করে খবর বের হলো প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে। এনিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দিলেন। আবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হলো এধরনের খবর বিভ্রান্তিকর। তাদের নিজেদের মধ্যেই স্ববিরোধি বক্তব্য। তার ওপর বিএনপিকে জড়িয়ে সুবীর ভৌমিকের অসত্য, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য। এসব বিএনপির বিরুদ্ধে গভীর কোন গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
রিজভী বলেন, আমার মনে হচ্ছে বিএনপির বিরুদ্ধে দেশিবিদোশি যে ষড়যন্ত্র চলছে তারই অংশ এটি। আমরা এধরনের ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, সুবির ভৌমিক ভারতের একজন সাংবাদিক। তাকে কিনা এদেশের একটি টিভি চ্যানেল বাংলাদেশের তিন তিনবার নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা,বানোয়াট কথা বলার সুযোগ দিলো। আর সুবীর ভৌমিক যতো সব বিভ্রান্তিকর কথা বলে গেলেন। এতো বড় স্পর্ধা সে কি করে পায়? কে সে? এসব বর্ণচোরাদের রুখে দিতে হবে।
রিজভী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ব্যর্থতা ঢাকতেই সরকার একের পর এক ইস্যু নিয়ে এসে পর্দা দিচ্ছে। এটি জাতীয়বাদী শক্তির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। দেশের মানুষকে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
এসময় রিজভী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া সাক্ষাতকার ‘জাতির পিতার হত্যার পর নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে ধ্বংস করেন। দিনের পর দিন আন্দোলন-সংগ্রাম করে গণতান্ত্রিক ধারাটা আবার ফিরিয়ে এনেছি। আজ নির্বাচন যত সুষ্ঠু হচ্ছে, মানুষ ভোট দিতে পারছে-এটা আমার অবদান। মানুষ তার পছন্দ মতো লোককেই নির্বাচন করবে। আমরা সেটাই চাই’ এই বক্তব্যের সমালোচনা করেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে দেশবাসী বিস্ময়ে বাক্যহারা। জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী বর্তমান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে বলতে চাই-তাহলে বাকশাল নামক জিনিসটা কী? আসলে শেখ হাসিনার সজ্ঞানুযায়ী গণতন্ত্র বলতে বুঝতে হবে সব দলের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়ে একক কর্তৃত্বে দেশ চালাবে, ভিন্ন মত থাকবে না, গণমাধ্যম সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে থাকবে, নির্বাচনের অর্ হবে ভোটকেন্দ্র ভোটারবিহীন শ্মশানভূমি , প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীবিহীন নির্বাচন।
রিজভী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে ২০১৪ সালের নির্বাচনের কথা মনে করতে বলেন।
এসময় সরকারের আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, আবারও প্রতি ইউনিটে পাইকারিতে প্রায় ১৫ শংতাংশ এবং গ্রাহক পযায়ে ৬ থেকে সাড় ১৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে কোম্পানিগুলো। এ নিয়ে আজ গণশুনানি। বিদ্যুত খাতের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যে হারে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, তা কার্যকর করা হলে শিল্পকারখানা ধ্বংস হয়ে যাবে। মিলকারখানা বন্ধ হয়ে লাখ লাখ চাকরিজীবী বেকার হয়ে যাবে।
আবারও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে এধরণের উদ্যোগ থেকে সরে আসার আহবান জানান।