সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁও গ্রামে ঘর, বাড়ি ও মন্দিরে হামলার পরের দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, ওই ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা থেকে তিনি নোয়াগাঁও আসেন। এরপর পুরো গ্রাম পরিদর্শন শেষে সেখানকার একটি মাঠে বক্তব্য রাখেন।
সে সময় আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হবে। যারা এর সাথে জড়িত কেউ রেহায় পাবে না। সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হবে। যাতে আগামীতে কেউ এ ধরণের অপকর্ম করতে সাহস পায় না।’
গ্রামবাসীকে ভয় না পাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার আপনাদের পাশে আছে। এই দেশ হিন্দু-মুসলিমসহ সকলের। এই চিন্তা করেই সরকার কাজ করছে এবং এজন্য দেশের অগ্রগতি হচ্ছে।’
র্যাব প্রধানের সঙ্গে র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদীর আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফেসবুকে ‘অপত্তিকর’ স্ট্যাটাসের জেরে বুধবার জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা মাওলানা মামুনুল হকের সমর্থকরা নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দুদের ঘর, বাড়ি এবং মন্দিরে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর করে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গ্রামের ৮৮টি বাড়ি এবং ৫টি মন্দির ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। তবে স্থানীয়রা বলছেন, কয়েক’শ বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপন নামের এক তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে সোমবার মাওলানা মামনুল হককে নিয়ে ওই স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। পরের দিন তাকে আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
কিন্তু তারপরও হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ওই গ্রাম ঘেরাও করে হামলা চালায়।
ঘটনার পর সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত নোয়াগাঁও ও হবিবপুর গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রাণ ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছে বহু মানুষ।