করোনা মহামারি মোকাবিলায় পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি শুরু হচ্ছে আজ। একই সাথে এ বিষয়ে জরুরি বৈঠকে বসছেন জি-সেভেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রীরা। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বকে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রধান। অন্যদিকে করোনার নতুন ধরনের জন্য টিকা বৈষম্যকে দায়ী করেছেন বিজ্ঞানীরা।
ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর দ্রুতই তা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আফ্রিকার পর সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে ইউরোপ। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত শনাক্ত। সেই সাথে বাড়ছে উদ্বেগ আর শঙ্কা। ওমিক্রনের উপসর্গ কেমন তা জানিয়েছেন, ধরনটির প্রথম শনাক্তকারী সাউথ আফ্রিকার মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ডক্টর অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি। আক্রান্ত রোগীর শরীরে কেবলমাত্র মৃদু উপসর্গ দেখেছেন তিনি এবং হাসপাতালে ভর্তি ছাড়াই পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন তারা। এছাড়া শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, চরম ক্লান্তি, পেশীতে মৃদু ব্যথা, গলা ব্যাথা, শুকনো কাশির মতো উপসর্গও দেখতে পান তিনি।
নেদারল্যান্ডসে ১৩ জনের শরীরে ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হওয়ায় তিন সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে এরই মধ্যে কঠোর বিধিনিষেধ ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ নানা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে পশ্চিমাসহ অন্যান্য দেশগুলো। বিদেশী পর্যটক ও বাংলাদেশসহ ঝুকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ভারত। এতে বলা হয়েছে বাধ্যতামূলক পিসিআর টেস্ট ও ৭ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে ভ্রমণকারীদের।
সাউথ আফ্রিকার ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে দেশগুলোকে একটি বৈজ্ঞানিক ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য নীতি অনুসরনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফ্রিকা অঞ্চলের প্রধান। সেই সাথে বিশ্বকে আফ্রিকার পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি। একই আহ্বান জানিয়েছেন সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান বলেছেন, করোনার নতুন ধরন মোকাবেলায় প্রয়োজনে টিকার ধরণে পরিবর্তন আনতে পুরো বিশ্বকে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে হবে।
বর্তমান সংকট মোকাবেলায় জেনেভায় আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তিনদিনের ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলিতে একটি বৈশ্বিক মহামারি চুক্তি নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। অন্যদিকে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ায় পরবর্তী করনীয় নির্ধারণে আজ জরুরি বৈঠকে বসবেন জি-সেভেন স্বাস্থ্য মন্ত্রীরা।
বিজ্ঞানী এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর টিকা দেওয়ার হারের মধ্যে বিশাল ব্যবধান বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের কম আয়ের দেশগুলোর মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ মানুষ এক ডোজ টিকা পেয়েছেন।