চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দুটি জঙ্গি আস্তানাকে ‘নব্য জেএমবি’র আস্তানা জানিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, তাদের টার্গেট ছিল বিদেশিদের ওপর হামলা করা এবং মিরসরাই-সীতাকুণ্ড অঞ্চলে বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করা।
সীতাকুণ্ডের চৌধুরী পাড়ার জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বুধবার সীতাকুণ্ড পৌরসভার লামারবাজার এলাকায় একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে এক নারী জঙ্গিসহ দুইজনকে আটক করে পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যে কলেজ রোড এলাকার চৌধুরীপাড়ার আরেকটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু হয়। পুলিশের এ অভিযানে এক নারীসহ দু’জন আত্মঘাতী ও অভিযানে দু’জনসহ চারজন নিহত হয়।
ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নিশ্চিত এরা নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্র সংগঠন ‘নব্য জেএমবি’। এখানকার দুটিই নব্য জেএমবির আস্তানা।
নব্য জেএমবির লক্ষ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিআইজি বলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল মিরসরাই-সীতাকুণ্ডে অঞ্চলে বিদেশিদের ওপর হামলা করে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করা। তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বড় ধরণের নাশকতার লক্ষ্যে প্রচুর গ্রেনেড ও বিস্ফোরক মজুদ করেছিল।
বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সীতাকুণ্ড পৌরসভার লামারবাজার আমিরাবাদের সাধন কুটির থেকে শিশুসহ গ্রেফতার জঙ্গি দম্পতিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা এখনো মুখ খোলেনি। তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দ্বিতীয় অভিযানে চৌধুরী পাড়ায় অপারেশন অ্যাসল্ট-১৬’তে দুই সোয়াট সদস্য আহত হন। আহতদের একজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া জিম্মি একটি পরিবারের ৫ সদস্যসহ মোট ২০ জনকে উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার বিকেলে চৌধুরীপাড়ার ছায়ানীড় ভবনের নিচতলার একটি বাসায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে ভেতর থেকে জঙ্গিরা হ্যান্ডগ্রেনেড ছোঁড়ে। এতে সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেলসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।
স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, ১৫ দিন আগে জঙ্গিরা ছায়ানীড় ভবনের নিচতলার বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল। ওই ভবনে আরও কয়েকটি পরিবার ভাড়া থাকে।
গত ৭ মার্চ কুমিল্লায় দুই জঙ্গিকে আটক করার পর তাদের একজনকে নিয়ে ওই রাতেই মিরসরাইয়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ২৯টি হাতবোমা, নয়টি চাপাতি, ২৮০ প্যাকেট বিয়ারিংয়ের বল এবং ৪০টি বিস্ফোরক জেল।
এরপর চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি এলাকায় এলাকায় ‘ব্লক রেইড’ দেয়ার নির্দেশনার কথা জানান চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা।