চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

সিলেটে টিলা কেটে সমতল ভূমি

সিলেটে বিভিন্ন এলাকায় টিলা কেটে সমতল ভূমি বানানো হচ্ছে। নগরী, সদর উপজেলা এবং আশেপাশের কয়েকটি উপজেলায় টিলা কাটার উপর উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না ভূমিদস্যুরা।

আগে দিনের বেলা প্রকাশ্যে শ্রমিক দিয়ে টিলা কাটানো হলেও এখন বেশির ভাগ সময় রাতে টিলা কাটা হয়। টিলা কাটার সঙ্গে জড়িতরা বর্ষায় সময় টিলার চূড়া কেটে নালা করে রাখে। ফলে বৃষ্টিতে মাটি ধসে পড়ে। পরে তারা সেখান থেকে মাটি কেটে নিয়ে যায়। টিলার পাশের বাসিন্দারা থাকেন মারাত্মক ঝুঁকিতে।

টিলা এলাকার বাসিন্দারা জানান, টিলাগুলো কাটার কারণে তারা ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন। কারণ কখন যে মাটি ধ্বসে পড়ে তা বলা যায়না। যখন টিলা থেকে প্রভাবশালী কিছু লোক মাটি কাটতে আসে তখন তারা পুলিশ ডেকে আনে। কিন্তু পুলিশ কিছুই করেনা। এলাকাবাসী অভিযোগ করছে তারা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বললে পুলিশ সদস্যরা জানায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি যিনি তিনি নিজেই উৎকোচ নেন। ফলে পুলিশও টিলা কাটা বন্ধ করতে পারেনা।

পরিবেশবিদরা বলছেন, গত কয়েক বছরে সিলেটের বেশির ভাগ টিলা ধংস হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে সিলেটে টিলা বলতে কিছু থাকবে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার সিলেট শাখার সাধারাণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, সিলেটে টিলা কাটা হচ্ছে  দীর্ঘ দিন যাবৎ। গত পাঁচ বছরে সিলেটের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ভাগ টিলা বিলীন হয়ে গেছে। একদিকে সংবাদকর্মীরা বিষয়টি তুলে ধরছে এবং পরিবেশকর্মীরা আন্দোলন করছে টিলা না কাটার জন্য, আর অন্যদিকে কিছু লোক ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য টিলা কেটে যাচ্ছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতা এবং সমর্থন নিয়ে।

তিনি আরো বলেন, যখন কোথাও টিলা কাটা হয়, এলাকাবাসী, পরিবেশকর্মীরা তা পুলিশকে জানালে পুলিশ সেখানে গিয়ে বরং উৎকোচ নিয়ে এসে টিলা কাটার বৈধতা দিয়ে আসে। এখনও সিলেটের ৫০ টির মত জায়গায় টিলা কাটা চলছে।

তবে সিলেটে একের পর এক টিলা কাটা হলেও জানে না পরিবেশ অধিদপ্তর। এরকম খবর পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সিলেটের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. ছালাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, টিলা কাটা আইনত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারা যখনই কোনো টিলা কাটার তথ্য পায় তাৎক্ষণিকভাবেই তারা ব্যবস্থা নেন।

সিলেটে এক সময় অসংখ্য টিলা থাকলেও এখন আর নেই। প্রভাবশালীরা একের পর এক টিলা ধ্বংস করায় স্থানীয় ভূ-প্রকৃতিও ধ্বংস হচ্ছে। পরিবেশের এই ধংসযজ্ঞ বন্ধের দাবি সচেতন মহলের।