রাজধানীতে যেন সিরিজ অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়েছে। চকবাজারের চুরিহাট্টা থেকে বনানী হয়ে এবার গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেট। গুলশান ছাড়া অন্য দু’টিতে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। তবে অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছেন সবখানের মানুষ।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নানা ধরনের সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে এখনও তেমন কোনো কার্যকর কর্মযজ্ঞ দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কঠোরতার কথা আমরা শুনেছি। চকবাজারে কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে গিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু সেখানেও তারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এমনটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বনানী ও গুলশানে অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন: ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আগামীকাল রোববার থেকে অভিযানে নামবে। এসময় অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে বা অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হলে ভবন সিলগালা করে দেয়া হবে।’ মন্ত্রীর এ বক্তব্যের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করছি। কারণ, বহুতল ভবনগুলো মানুষের মৃত্যুর ফাঁদ হয়ে থাকুক তা আমরা চাই না।
পুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের পর বলা হয়েছিল ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় সেখানে বহু প্রাণহানি হয়েছে। কিন্তু বনানীতেও আমরা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখলাম। এর মানে ঢাকা শহরের কোথাও এখন মানুষ নিরাপদ নয়। ফায়ার সার্ভিসের জরিপ অনুযায়ী ঢাকার বেশিরভাগ ভবনে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। শ ম রেজাউল করিম বলেন: ‘শুধু গুলশান-বনানী নয়, ঢাকা শহরের যে কোনো স্থানে যদি অপরিকল্পিতভাবে ইমারত নির্মিত হয়ে থাকে, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকে, সেই বিষয়ে আগামীকাল রোববার থেকে রাজউকের পরিদর্শন শুরু করবে।’
সফলতার সাথে এ অভিযান পরিচালিত হোক আমরা এমনটাই চাই। মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, কোনো ভবন পরিকল্পনা বা নিয়মের বাইরে হয়েছে কিনা তা ১৫ দিনের মধ্যে চিহ্নিত করা হোক। প্রয়োজনে সিলগালা কিংবা অপসারণ করা হোক। অথবা উপযোগী অবস্থা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এসব ভবনে সব রকম কার্যক্রম স্থগিত রাখা হোক। এ শহরকে বসবাসের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।