সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার, সার্জেন্ট আইয়ুব আলী ও ইমাম সালে আহমদ এর সাক্ষ্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তৃতীয় পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ।
দেশের আলোচিত সিনহা হত্যা মামলার পরবর্তী সাক্ষীর দিন ধার্য করা হয়েছে ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর। ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হবে চতুর্থ পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ১০ টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইসমাঈলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয়েছে বিকেল পাঁচটায়।
তিনদিনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য্য রেখেছেন বলে জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।
তৃতীয় ধাপের প্রথম দিনে জবানবন্দি দিয়েছেন আব্দুল হামিদ, মোহাম্মদ ফিরোজ ও শওকত আলী নামে তিনজন। দ্বিতীয় দিন সাক্ষ্য দেন মারিশবনিয়া মসজিদের ইমাম হাফেজ জহিরুল ইসলাম ও ডা: রণবীর দেবনাথ। তাদের ১৫ জন আসামীপক্ষের আইনজীবিরা জেরা করেছেন।
এরআগে, দ্বিতীয় ধাপের চারদিনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর)। দ্বিতীয় ধাপের চতুর্থ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৬নং সাক্ষী শামলাপুর বায়তুর নুর জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম। শেষ হয় বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর)। দ্বিতীয় ধাপের চতুর্থ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৬নং সাক্ষী শামলাপুর বায়তুর নুর জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম। শেষ হয়েছে। চতুর্থ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৬নং সাক্ষী শামলাপুর বায়তুর নুর জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম।
দুই ধাপে মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসহ ৬ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। তাদেরকে জেরাও শেষ করেছে আসামীপক্ষ। আগামী ২০,২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে দিন ধার্য্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। তার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলামকে (সিফাত) পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তার ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করে। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এই দুজন পরে জামিনে মুক্তি পান।
সিনহা হত্যার ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, একটি রামু থানায়। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের ৯ সদস্য। তারা হলেন, বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, কনস্টেল রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল সাগর দেব নাথ।
অপর আসামিরা হলেন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও মো. আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের করা মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, মো. নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।