একত্রিশ বছরের ধারাবাহিকতায় ২০ মার্চ ২০২১ বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১ তম জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করে ইঙ্গেলবার্নের গ্রেগ পার্সিভাল হলে।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী, নিউ সাউথ ওয়েলস এর প্রিমিয়ার, মান্যবর হাই কমিশনার, কনসাল জেনারেল ও ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলের মেয়র শুভেচ্ছা বাণী এবং স্হানীয় বিশিষ্ট লেখক-লেখিকা ও নবপ্রজন্মের ছোটদের লেখাসহ একটি স্মরনীকা প্রকাশ করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি ড. রতন কুন্ডুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জনাব রফিক উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে সাধারণ সম্পাদক আজকের অনুষ্ঠানের তাৎপর্য ও গুরুত্ব ব্যাখা করে আগত সকল অতিথিবৃন্দকে স্বাধীনতার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার জনাব সুফিউর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম।
শতকণ্ঠে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশনা, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ এবং বঙ্গবন্ধু সহ আমাদের সকল স্বাধিকার আন্দোলন ও ‘৭১ এর মুক্তিযাদ্ধে নিহিত ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মার মাগফেরাত এবং সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশ প্রত্যাশায় মহান করুনাময়ের দরবারে দোয়ার মাধ্যমে সুচনা করা হয় মুল অনুষ্ঠানের।
অনুষ্ঠানে ‘পাঁচ দশকের বাংলাদেশে শতবর্ষের মুজিব’ সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ পাঠ করেন ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. কাইয়ুম পারভেজ। তিনি তার নিবন্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন, স্বাধীন সার্বোভৌম বাংলাদেশ অর্জনে তার ত্যাগতিতীক্ষা, বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের গৌরবময় অর্জনগুলো তুলে ধরেন। নির্ধারিত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি কৃষিবিজ্ঞানী ড. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, অত্র সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি ও উলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. খায়রুল হক চৌধুরী, ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকঃ ড. মাসুদুল হক, ড. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতিঃ জনাব সিরাজুল হক।
প্রধান অতিথির ভাষণে জনাব সুফিউর রহমান বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান বাংলাদেশের উপর আলোচনা করেন। জাতির জনক তার পুরো জীবনেই দেশকে তথা দেশের মানুষকে ভালোবেসে অপরিসীম কষ্ট ও ত্যাগ তিতিক্ষার মাধ্যমে অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, যা পুরো জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তিনি আরো বলেন সাম্প্রতিক সময়ে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন। এ উন্নয়নের পেছনে রয়েছে তার দূরদর্শিতা, সঠিক দিক নির্দেশনা ও রাষ্ট্র প্রণীত উন্নয়নের নীতিমালা। বঙ্গবন্ধু’র আদর্শ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন পরবর্তী প্রজন্মকে ব্যক্তি জীবনে ধারণ করার উপরও তিনি গুরুত্ত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথি জনাব খন্দকার মাসুদুল আলম অনুষ্ঠানে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মিজানুর রহমান তরুণ, হেলাল উদ্দিন, শাহাদাৎ হোসেন ও কৃষিবিদ ওসমান গনিকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধিত করেন। আয়োজকদের পক্ষ হতে কিশোর কিশোরীরা বিশেষ অতিথি হিসেবে আগত অন্যান্য অতিথি ও ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলের সম্মানিত মেয়র এর প্রতিনিধি বাংলাদেশী বংশোদ্ধোত কাউন্সিলর জনাব মাসুদ চৌধুরী কে ও পুষ্পস্তবক প্রদান করে।
সম্মানিত কনসাল জেনারেল বক্তব্যের শুরুতেই এরকম একটি বিশাল ও তাৎপর্যপূর্ণ আয়োজনের জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও তার অগ্রযাত্রায় তারই সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। নব প্রজন্মের কিশোর কিশোরীদের মধ্যে ইনাম তালুকদার, লামিস সাইয়েদ ও রাইসা হালিম স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের উপর বক্তব্য রাখে।
মালিক সাফি জাকির মূল পরিকল্পনায় ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক সম্পাদকঃ ফারিয়া নাজিমের সঞ্চালনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের গান পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন ফারিয়া নাজিম, রুনু রফিক, নিলুফা ইয়াসমিন, লামিয়া আহমেদ, সীমা আহমেদ, রোমানা হক, ফাইজা কালাম রুবা, সুলতানা নূর, সুমাইয়াত খানও শহিদুল আলমসহ অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ।| পূরবী বড়ূয়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা এবং কবি নির্মেন্দ গুনের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন মুসতাক আহমেদ প্রিন্স। বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে পূরবী পারমিতা বোসের দেশের গানের সাথে অপূর্ব কোরিওগ্রাফি, শিশু শিল্পী রুপন্তি ও প্রতিশ্রুতির ধ্রুপদী নৃত্য দর্শক শ্রোতাদের বিমুগ্ধ করেছে।|
সবশেষে সভাপতি, সাধারন সম্পাদক, সংগঠনের সকল সদস্য, আগত অতিথি ও উপস্থিত শিশু কিশোরদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু’র জন্য একটি কেক কেটে আগত সকল অতিথিবৃন্দকে নৈশ ভোজের আহ্বান জানিয়ে তিনি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।