চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সিইসির মুখে জিয়ার প্রশংসাকে ফাঁদ মনে করছে না বিএনপি

বিএনপির সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বিএনপি এবং এর প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যে প্রশংসা করেছেন তাকে কোন ফাঁদ মনে করছে না দলটি।

দলের শুভাকাঙ্খী বুদ্ধিজীবীসহ নেতারা দাবি করছেন, সিইসি বরং সত্যটা স্বীকার করেছেন। এর মধ্যে আপাতত কোন ফাঁদ দেখতে পাচ্ছেন না তারা।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের চলমান সংলাপে রোববার বিএনপির সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকে জিয়াউর রহমানকে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সিইসি বলেন: ব্যক্তি হিসেবে এবং দলনেতা হিসেবে জিয়াউর রহমান চার বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। তার হাত দিয়েই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা লাভ করে।

সংলাপের সূচনা বক্তব্যে বিএনপিকে ‘সফল রাষ্ট্রপরিচালনার সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকা একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল’ হিসেবে বর্ণনা করে দলটির প্রশংসায় তিনি বলেন: বিএনপি সরকার দেশে বহুবিধ উন্নয়ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা, আলাদা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠা, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষা, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যটালিয়ান গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা, আইন কমিশন গঠন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছরে উন্নীতকরণ।

সিইসির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আমি মনে করি না ইসির মুখে বিএনপি এবং জিয়াউর রহমানের প্রশংসা কোন ফাঁদ। কারণ সিইসি যা বলেছেন তা তো সত্যিই বলেছেন। কেননা এটাই তো ফ্যাক্ট।

‘দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র জিয়াই প্রতিষ্ঠা করেছেন। কারণ ১৯৭৫ সালের ৩০ জানুয়ারির পর প্রকৃত অর্থে দেশে কোন গণতন্ত্র ছিল না, যা জিয়াউর রহমানই পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার শুভাকাঙ্খী হিসেবে পরিচিত ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, হয়তো বিএনপিকে খুশী করার জন্য সিইসি এটা বলেছেন। কিন্তু এতে যদি আলোচনার ভালো পরিবেশ তৈরি হয় তাতে মন্দ কিছু নেই।

বিএনপির অন্যতম সহসভাপতি শামসুজ্জামান দুদুও চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: সিইসি সত্যটা স্বীকার করেছেন। ‘তাই আপাতত আমরা এটাকে ফাঁদ মনে করছি না।’

তবে এখনই ইসিকে পুরোপরি আস্থায় নিতে পারছে না দলটি। ইসিকে আস্থায় আনার আগে তাদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে চান বিএনপি নেতারা।

সত্য সত্যই। তা সবাইকেই স্বীকার করতে হয়। সিইসিও স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাদেরকে বিএনপি আস্থায় নিতে পারবে কিনা তা নির্ভর করছে তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর।

তবে বিএনপির আস্থা অর্জনে এটা ইসির কৌশলও হতে পারে উল্লেখ করে কৃষক দলের সাবেক এ শীর্ষ নেতা বলেন: আমরা আশা করবো সেটা কুটকৌশল নয়, সুকৌশলই হবে।

তিনি বলেন: ‘ইসি যদি সত্যিই বিএনপির আস্থা অর্জন করতে চায় তবে আশা করবো, আমাদের দেওয়া প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।’



দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বর্তমান সিইসিকে আওয়ামী লীগের দলীয় লোক হিসেবে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। এ সম্পর্কে এখনকার অবস্থান জানতে চাইলে বিএনপির সহসভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেন: সত্য বলেই আমরা অভিযোগ করেছি। আমরা অভিযোগ থেকে সরে আসছি না।

তবে ইসি যদি প্রকৃত অর্থেই একটি অবাধ-সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন করতে চায় তবে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।