সাগরপথে পাচারের আগে অসহায় যুবকদের এনে রাখা হয় দালালদের নির্দিষ্ট করা একটি জায়গায়। সেখান থেকে তাদের তোলা হয় জেলেদের মাছ ধরার ট্রলারে। এরপর পাঠিয়ে দেয়া হয় সাগরের ভয়াল পথে। এমন এক পাচার চক্র থেকে কৌশলে বেরিয়ে আসে উখিয়ার ২০ বছরের তরুণ রেজাউল।
উখিয়া উপজেলার পিএম খালী ইউনিয়নের মাতোয়াখালী গ্রামের তরুণ রেজাউল। দালালদের খপ্পড়ে পড়ে সে ও পা বাড়িয়েছিল সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার আশায়। ডেটলাইন ৩ নভেম্বর, ২০১৩। তার মতো উখিয়ার আরো ২০ তরুণকে ট্রলারে ওঠানোর আগে জড়ো করা হয় স্থানীয় কোর্ট বাজার এলাকায়।
দালালের কাছ থেকে কৌশলে ফিরে আসা রেজাউল চ্যানেল আইকে জানায়, বিদেশের টাকা উপার্জন করার লোভ দেখিয়ে দালালরা প্রথমে আমাদের কোর্ট বাজারে যেতে বলে। সেখানে অন্য দালালরা আমাদের গ্রহণ করে। কারো সঙ্গে কোনো কথা বলতে নিষেধ করে দেয়া আমাদের। ট্রলারের ওঠার ঠিক ৫ মিনিট আগেই আমি কৌশলে নেমে পড়ি। রেউজাউল আরও জানায়, ট্রলারে থাকা বাকি ১৯ জনের খোঁজ খবর এখনো জানা যায়নি। কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। পাচার হওয়া ১৯ জনের দেশে ফিরে না আসায় শঙ্কিত স্বজনরা।
যে দালালের খপ্পরে পরে ওই ভয়াল যাত্রা পাড়ি দিতে চেয়েছিলো রেজাউল সেই দালাল মিজান এখন পলাতক। তবে বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায় মিজানের মাকে। দালাল মিজানের পক্ষে টাকা তুলার অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি বলেন, আমি কখনো দালালের টাকা নিইনি। মিজান কই আছে তাও জানি না।
নিজের বুদ্ধিতে পাচারের হাত থেকে রেজাউল ফিরে এলেও সব তরুণ পারে না সাগর পথ থেকে ফিরে আসতে। এসব তরুণ-যুবকদের রক্ষায় কাজ করছে মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটি।
কক্সবাজার মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন,এই প্রতিরোধ কমিটির হওয়ার পর থেকে শত শত তরুণ ও যুবকদের আমরা পাচারের হাত থেকে উদ্ধার করছি। এবং সচেতন করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে এসব তরুণদের।
সচেতনরা বলছেন, মানবপাচার ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবে অন্যরা, যাতে তাদেরও পা বাড়াতে না হয় সাগর পথের অনিশ্চিত যাত্রায়।