চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সারা দেশের লেভেল ক্রসিং সুরক্ষায় হাইকোর্টের রুল

দুর্ঘটনা রোধে সারা দেশের রেল আর সড়কের সংযোগস্থল বা লেভেল ক্রসিং সুরক্ষায় রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

সম্প্রতি লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের থাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ জন আরোহী নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ বিষয়ে রুল জারি করেন।

আদালত তার রুলে, সারা দেশের লেভেল ক্রসিংয়ের সীমানা চিহ্নিত করে লোহার প্রতিবন্ধকসহ গেইট তৈরি এবং গেইট ম্যান নিয়োগের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চান।

এছাড়াও বর্তমানে অননুমোদিত থাকা লেভেল ক্রসিংগুলো আইনানুসারে কেন পুনঃনির্মাণ করা হবে না এবং রেলওেয়ের অনুমোদন ছাড়া আর কোনো লেভেল ক্রসিং নির্মাণ না করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রেলওয়ে এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের মহাপরিচালক ও এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আজ শুনানিতে রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব আদালতকে বলেন: রেল দুর্ঘটনায় যত প্রাণহানি হয় তার অন্যতম প্রধান কারণ অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং। কখনো বাসের সঙ্গে, কখনো মাইক্রোবাসের সঙ্গে বা অন্য কোন যানবাহনের সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষেই প্রাণহানিগুলো ঘটছে।

এই আইনজীবী শুনানিতে আরো বলেন: দেশে বৈধ লেভেল ক্রসিং ১ হাজার ৪১২টি। আর অবৈধ লেভেল ক্রসিং ১ হাজার ৮৫টি। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এসব অবৈধ লেভেল ক্রসিং তৈরিতে জড়িত। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবৈধ লেভেল ক্রসিং এলজিইডি ও ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তায়।

শুনানিতে ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব একাধিক তথ্যসূত্র উল্লেখ করে বলেন: এ বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত রেলে ১০৩ টি দুর্ঘটনায় ১২২ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৯৬ জন আহত হয়েছে।

শুনানি শেষে হাইকোর্ট সারা দেশের রেল লেভেল ক্রসিং সুরক্ষায় রুল জারি করেন। এ সময় রিটকারি আইনজীবী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রেলক্রসিংয়ে ট্রেন ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে বর-কনেসহ নিহত ১১ জনের বিষয় ক্ষতিপূরণের আদেশ চান।

এ সময় আদালত বলেন যারা ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী, তারা আসলে আমরা এ বিষয়ে দেখব। ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে আমার আজ কোনো আদেশ দিব না।

গত ১৮ জুন মানবাধিকার সংগঠন ল’ এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সিরাজগঞ্জের দুর্ঘটনায় বর-কনেসহ নিহত ১১ জনের প্রত্যেকের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট করা হয়।

রিটে নিহতদের পাশাপাশি আহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। এছাড়াও নতুন করে রেলের লেভেল ক্রসিং নির্মাণ, অবৈধ লেভেল ক্রসিং বন্ধ, গেটম্যান নিয়োগ এবং ট্রেনের ছাদে যাত্রী তোলা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।