চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

গোপালগঞ্জের সাবেক ভিসি’র বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের পাহাড়সম অভিযোগ

আসাদুজ্জামান বাবুল: শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সদ্য পদত্যাগকারী গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন তার নিকট আত্মীয়সহ ২৭ জনকে বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি টাকার বিনিময়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ভাতিজাসহ কমপক্ষে আরো ৫০ জনকে চাকরি দিয়েছেন। প্রায় ৩০ থেকে ৪০জন জামায়াত-বিএনপি পন্থী শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। তার নিয়োগ দেয়া ওইসব শিক্ষকরাও তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে শরীক হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়েছে, এমন ব্যক্তিকেও চাকরি দিয়েছেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। নাম পরিবর্তন করে এক ভাইয়ের পদে অন্য ভাই চাকরি করছেন বছরের পর বছর, এমন অভিযোগের প্রমাণও পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নথি থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাসির উদ্দিন ছাড়াও এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনের নামও উঠে আসছে তথ্য সংগ্রহকালে।

জানা গেছে, গত সাড়ে ৪ বছরে তিনি এসব মানুষদের চাকরি দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড অনুযায়ী দেখা যায়, গত সাড়ে ৪ বছরে সাবেক ভিসির নিকট আত্মীয় ২৭জন ছাড়াও আরো ৮ জনকে চাকরি দিয়েছেন। আপনজনদের মধ্যে চাকরি পেয়েছেন যারা তারা হলেন সহকারী অধ্যাপক শরাফত আলী (ভাগ্নি জামাই), সেকশন অফিসার হামীম খোন্দকার (ভাতিজা), সহকারী অধ্যাপক মাহামুদ পারভেজ (ভাতিজা), সেকশন অফিসার কানিজ ফাতেমা (বোনের ননদের মেয়ে), হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা চৌধুরী মনিরুল হাসান (ভাগ্নে), অডিট অফিসার ফয়সাল আহম্মেদ (বন্ধুর ভাগ্নে), সহকারী অডিট অফিসার (বন্ধুর ভাগ্নের স্ত্রী), সহকারী প্রোগ্রামার আবীর আহসান মনির (ভাগ্নে), প্রশাসনিক কর্মকর্তা আতাউর হোসেন (মামাতো বোনের ছেলে), প্রশাসনিক কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম (ভায়রার ছেলে), প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম (ভাতিজা), ডেপুটি রেজিস্ট্রার খানঁ মোহাম্মাদ আলী (নিকট আত্মীয়), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম (খানঁ মোহাম্মাদ আলীর শালা), অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর বাহারুল ইসলাম (খালাতো বোনের ছেলে), অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর (পারভেজের আপন বোন, এইচএসসি পাশ), অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর (বড় বোনের মেয়ে, এইচএসসি পাশ), অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মুশফিকুর রহমান (ময়মনসিংহের উপাচার্যের বাসায় থাকতেন), নিরাপত্তা সহকারী (মোশারেফের চাচাতো ভাই), এমএলএসএস আজিজ খোন্দকার (চাচাতো ভাইয়ের ছেলে), মালি শাহআলম তালুকদার (চাচাতো বোনের ছেলে), মালি রেজাউল খোন্দকার (চাচাতো ভাই), মালি এয়াহিয়া সিকদার সোনাকুড় (বেয়াই), মালি ওছিকার সোনাকুড় (বেয়াই, সরকারি চাকরির বয়স শেষ)। সর্বশেষ মেয়াদ বাড়ার আগে আপন ভাগ্নেসহ ৮জনকে চাকরি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, নাসির মোল্লা নামে এক গার্ড ভিসির মাধ্যমে চাকরি দেয়ার নাম করে কাশিয়ানীর দুই ব্যক্তির কাছ থেকে আইনজীবির মাধ্যমে প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু চাকরি দেননি তাদের। এমনকি তাদের টাকাও ফেরত দেননি।

নাসির উদ্দিনের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে এমএলএসএস আজিজ খোন্দকারের বিরুদ্ধেও নারী কেলেংকারী ও লাখ লাখ টাকার অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চেয়ে সাবেক ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। একবার শুধু রিসিভ করে হ্যালো বলে কেটে দিয়েছেন।