একই মঞ্চ, একই প্রতিপক্ষ, ব্যবধানটাও এক। বিজয়ীর নামটাই কেবল আলাদা। গত বছর যে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ কিশোরীরা, থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে সে একই ব্যবধানে মারিয়াদের হারিয়ে সাফের অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্ব ঘরে তুলেছে ভারত।
অথচ কী এক সুবর্ণ সুযোগই না ছিল মারিয়া মান্ডার সামনে। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয়বারের মত সাফের শিরোপা উঁচিয়ে ধরার। কিন্তু হল উল্টোটা। ফুটবল দেবতা হাসলেন ভারতের দিকে চেয়ে। তাতে টানা দ্বিতীয়বারের মত সাফের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখা হল না বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ কিশোরীদের।
ম্যাচের শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল এক বিন্দু ছাড় দিতে রাজী নয় ভারত। গ্রুপপর্ব ও সেমিফাইনাল মিলিয়ে প্রথম তিন ম্যাচে বল পায়ে রাজত্ব করার পর ফাইনালে বেশ ভালো পরীক্ষাই দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রথম আধাঘণ্টা পর্যন্ত মারিয়াদের বল পায়ে যাওয়া মাত্রই কেড়ে নিয়েছে ভারতের কিশোরীরা। বড় রকমের আক্রমণ শানাতে না পারলেও লাল-সবুজ রক্ষণে প্রায়ই আতঙ্ক ছড়িয়েছে দলটি। পুরো টুর্নামেন্টে অনেকটাই বেকার থাকার পর প্রথমবারের মত ব্যস্ত দেখা গেছে গোলরক্ষক মাহমুদা আক্তারকেও।
ভারতের আক্রমণের দিকে এক চোখ রেখেই পরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। শক্তির জায়গা মাঝমাঠে আস্তে আস্তে দখলেও নেয়। যদিও বলার মত আক্রমণ খুব একটা দেখা যায়নি। পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ সব দূরপাল্লার শটে গোল পাওয়া বাংলাদেশ তাদের প্রথম আক্রমণটি শানায় সেই দূরপাল্লার শটেই। ৩৮ মিনিটে তিন ম্যাচে ৪ গোল করা তহুরা খাতুনের শটটি ক্রসবারের হাল্কা উপর দিয়ে চলে যাওয়ায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি লাল-সবুজদের।
পুরো টুর্নামেন্টে এই প্রথমবারের মত গোলহীনভাবে প্রথমার্ধ শেষ করতে হয় বাংলাদেশকে। যদিও বিরতির দুই মিনিট আগে গোলের দারুণ সুযোগ ছিল দলটির সামনে। ৪৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে তাড়াহুড়ো না করে ঠাণ্ডা মাথায় শট নিলে গোল পেতে পারতেন ফরোয়ার্ড সাজেদা।
দ্বিতীয়ার্ধেও বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরায় ভারত। আধিপত্য ধরে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের জালে বলও পাঠায় ডি সুজার দল। ৬৬ মিনিটে কর্নার থেকে আকাশে ভাসানো বলে ভলি করে বাংলাদেশি গোলরক্ষক মাহমুদা আক্তারকে প্রথমবারের মত পরাস্ত করেন সুনীতা মুন্ডা।
গোল শোধে মরিয়া হয়ে আক্রমণ শানালেও কাঙ্ক্ষিত গোল দূরেই রয়ে যায় বাংলাদেশের। ৮১ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে নেয়া তহুরার শট বারে লেগে ফেরে। এমনকি ৯৩ মিনিটে সাজেদার উড়িয়ে দেয়া বল ফাঁকা পোস্টে পেয়েও হেডে যেভাবে বার ঘেঁষে বাইরে পাঠালেন তহুরা খাতুন, তাতেই যেন ঠিক হয়ে যায় এবার খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশ কিশোরীদের।