চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে ঘিরে বিতর্ক যেনো থামছেই না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুনকে নিয়ে ‘জালিয়াতি’র মাধ্যমে নির্বাচনে জায়েদ পাশ করেছেন অভিযোগ তুলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ ‘আবারও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন চেয়েছেন’!
রবিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে চিত্রনায়িকা নিপুণ বলেন, শুধুমাত্র সাধারণ সম্পাদক পদটিতে আবার নির্বাচন চাই।
তিনি বলেন, জায়েদ খানের সাহস থাকলে সে সৎভাবে আবার নির্বাচনে আসুক। আমার পদটিতে কারচুপি ও জালিয়াতি করা হয়েছে। দেশবাসী যেভাবে আমার জন্য দোয়া করেছে আমার বিশ্বাস সঠিকভাবে নির্বাচন হলে আমি জয়ী হতাম।
একটি পদে ‘আবার নির্বাচন করার সুযোগ আছে কি না বা শিল্পী সমিতির গঠতন্ত্রে আছে কি না’ জানতে চাইলে নিপুণ বলেন, হ্যাঁ, নির্বাচন কমিশনার চাইলে আবার সম্ভব, প্রয়োজনে আমি এ বিষয় নিয়ে আদালতে যাব। তবে আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুনের বিরুদ্ধেও বেশকিছু অভিযোগ এনে নিপুণ বলেন, নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন ভোটের দিন সকালে আমার কাছে ২টা চুমু চেয়েছিলেন। সেখানে আমার প্যানেলের জেসমিন ছিল। নির্বাচন কমিশনারের এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। তাকে সিনেমা নাটকে কোনোদিন না নেওয়া উচিত সেই দাবি জানাই।
নিপুণ অভিযোগ করে বলেন, জায়েদ খান, এফডিসির এমডি, আর নির্বাচন কমিশনার পীরজদা হারুন একটা চক্র। তারা সবাই মিলে জায়েদ খানকে জিতিয়ে দিয়েছে। তারা টাকা দিয়ে ভোট কিনেছে ভিডিওতে সেটা দেখা গেছে।
নিপুণ বলেন, নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে ভোটারদের টাকা দেন জায়েদ খান। আমার প্যানেলের কোষাদক্ষ আজাদ খান ও নির্বাহী সদস্য প্রার্থী জেসমিন দেখেছেন। আমি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। নির্বাচনের দিন আমরা বাইরে থেকে খাবার আনতে পারিনি। সারাদিন পানি এবং চা খেয়ে ছিলাম। বাথরুমে যাবো সেই পরিবেশও দেয়া হয়নি।
নিপুণের এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরাজিত সহসভাপতি প্রার্থী রিয়াজ, নির্বাচিত সহ সম্পাদক সাইমন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নিপুণের প্যানেলের নির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, যেহেতু অন্যায় করা হয়েছে এবং নিপুণের অভিযোগের ভিত্তিতে শক্তিশালী প্রমাণ রয়েছে তার পদে আবার নির্বাচন করা হোক। আমি নিপুণের সঙ্গে একমত।
এই সংবাদ সম্মেলনে নিপুণ কিছু ম্যাজেঞ্জারের চ্যাটের স্ক্রিনশট দেখান। তার দাবি, এই স্ক্রিনশটগুলো জায়েদ খানের। নির্বাচনে জালিয়াতির এই স্ক্রিনশটগুলো প্রসঙ্গে নিপুণ বলেন, ইতোমধ্যে এগুলো আমি পুলিশের আইজিপি মহোদয়কে পাঠিয়েছি। তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
নিপুণের এসব অভিযোগের বিষয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন বলেন, ‘চুমু’ প্রসঙ্গটি নিয়ে নিপুণ যা বললেন, একজন শিল্পীর এমন অভিযোগে আমি মর্মাহত। নির্বাচনের দিন শিল্পী, গণমাধ্যমকর্মীতে পূর্ণ ছিলো এফডিসি; তার এ অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যে।
সাধারণ সম্পাদক পদে পুনরায় নির্বাচন দাবির প্রেক্ষিতে পীরজাদা বলেন, এটা সম্ভব নয়। ভোট গণনা নিয়ে আপিল করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতে পুনরায় ভোট গণনা করে আপিল বোর্ড। সেসময় তিনিও উপস্থিত ছিলেন। এখন যদি তিনি পুনরায় ভোট দাবি করেন, সেটার এখতিয়ার গঠনতন্ত্র অনুসারে আমাদের নেই। তিনি আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন চাইলে।