আরও বেশি সংখ্যক হাজিকে জায়গা দিতে নব নির্মিত স্থাপনার অংশ স্ট্রিট ২০৪। এ পথেই ক্যাম্প থেকে হাজিরা যাচ্ছিলেন ‘জামারাত’। জামারাত হলো শয়তানের প্রতি ধিক্কার জানানোর জায়গা। পড়নে এহরাম, মুখে আল্লাহু ধ্বনি এবং শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য তাদের হাতে ছিলো ৭ টি কংকর ( পাথর)। ছোট ছোট শিশুও ছিলো তাদের সঙ্গে। ‘জামারাতের’ কাছাকাছি পৌঁছানোর পরই তারা মুখোমুখি হন নারকীয় ঘটনার। উল্টো দিক থেকে আসা জনস্রোতের তোড়ে শুরু হয় প্রচণ্ড হুড়োহুড়ি। ভিড়ের চাপে নিঃশ্বাস নিতে না পারা দিশেহারা মানুষগুলোর মধ্যে ভর করে মৃত্যুভয়।
কেউ কেউ প্রচণ্ড বেগের ধাক্কা সামলাতে না পেরে পড়ে যান এবং তখনই ঘটে হাজিদের পায়ের নিচে শতশত হাজির পদপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনা। তবে সেসময়েও আল্লাহ-আল্লাহ বলছিলেন অনেকে। আবার কাঁদছিলেন নিরুপায় মানুষগুলো, বিশেষ করে নারী-শিশুরা। একসময় থেমে যায় আল্লাহ ধ্বনি , কমে আসে কান্নার শব্দও। কেবল শোনা যেতে থাকে অজস্র আহতের গোঙানি।
‘একটু শ্বাস নেয়ার জন্য একজনকে মাড়িয়ে আরেকজন বাঁচার চেষ্টা করছিলেন’ নারকীয় সেই পরিস্থিতিতে হাজিদের অসহায়ত্ব এভাবেই বর্ণনা করেন আবদুল্লাহ লোতফি নামের এক মিশরীয় হাজি।
‘যতোদূর চোখ গেছে দেখেছি শুধু লাশ আর লাশ’ হাজিদের করুণ পরিণতি দেখা সেই বিভীষিকার কথা বলতে গিয়ে এ কথা বলেন বশির সা’দ আবদুল্লাহ নামের এক মুসল্লি।
এপর্যন্ত ৭১৭ জন হাজি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে ৪ বাংলাদেশী হাজির লাশ সনাক্ত করা হয়েছে।
তবে নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগ হাজিই আফ্রিকার দেশগুলো থেকে আসা। তাদের মধ্যে অনেকেই নাইজেরিয়া, শাদ, নাইজার এর অধিবাসী।